ছোট রাজদীপ খুঁজে পেল নতুন ঠিকানা

নিজস্ব প্রতিনিধি, কাঞ্চনমালা, ২১ জুলাই: অনাথ শিশু খুজে পেল নতুন ঠিকানা। আজ শিশুর দাদু ছোট্ট রাজদীপকে তুলে দিল শিশু হোমে। যাতে সে মা-বাবার আদর ভালোবাসা না পেলেও একজন মানুষের মত মানুষ হয়। সমাজে দশটা লোকের মতো সেও যাতে একদিন বড় মানুষ হতে পারে। এমনটা বলে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছিল এক বৃদ্ধের।

গোলাঘাটি বিধানসভার অন্তর্গত কাঞ্চনমালা এলাকার জন্টু পাল এবং মৌসুমী গোস্বামীর একমাত্র সন্তান সেই রাজদীপ পাল। মৌসুমী গোস্বামী সন্তান জন্মাবার পর থেকেই একই এলাকার দুই নং ওয়ার্ডের তার বাবা হরিপদ গোস্বামীর বাড়িতে চলে আসে একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে। জন্টু পাল কোনদিনও তার স্ত্রী এবং সন্তানের ভালো মন্দ খোঁজখবর নেয়নি। এদিকের ছোট্ট রাজদীপ পাল মা মৌসুমি গোস্বামী এবং দাদু হরিপদ গোস্বামীর কাছে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে। এরই মধ্যে গত বছর দুয়েক আগে মৌসুমী গোস্বামী কোন এক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অসহায় হয়ে পড়ে ছোট্ট রাজদীপ।

মা মরা রাজদীপকে তখন বুকে টেনে নেয় তার দাদু হরিপদ গোস্বামী। হরিপদ গোস্বামীর বর্তমান বয়স ৭২, তিনি একজন দিনমজুর। বৃদ্ধ শরীর নিয়ে তিনি সব সময় কাজও করতে পারেন না। তিনিও এখন দুই ছেলের উপর ভরসা করে আছেন। কিন্তু নাতি রাজদীপকে কিভাবে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মত মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবেন তা নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন দাদু হরিপদ গোস্বামী। বেশ কিছুদিন আগে  সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হয়ে হরিপদ গোস্বামী নাতি রাজদীপ পালের কষ্টের কাহিনী তুলে ধরেছিলেন। তারপর এই খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল।

শেষে সংবাদের জেরে কিছুদিন দেরিতে হলেও পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার চাইল্ড লাইনের কর্মীরা শুক্রবার কাঞ্চনমালা স্থিত হরিপদ গোস্বামীর বাড়িতে ছুটে আসেন  এবং ছোট্ট রাজদীপ পালের ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে দাদু হরিপদ গোস্বামী চাইল্ড লাইনের কর্মীদের হাতে তুলে দেন। এদিকে চাইল্ড লাইনের কর্মীরাও হরিপদ গোস্বামীকে আশ্বাস দেয় যে রাজদীপ পাল যতদিন পর্যন্ত সাবালক বয়স না হবে ততদিন পর্যন্ত সরকার তার সমস্ত দায়ভার গ্রহণ করবে। পরে হরিপদ গোস্বামীর দুই চোখ দিয়ে বুকফাটা বেদনার জল গড়িয়ে পড়ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *