কাছাড়ে এনকাউন্টার, ধরাশায়ী সশস্ত্ৰ তিন ‘মার’ উগ্রপন্থী

ধলাই (অসম), ১৭ জুলাই (হি.স.) : কাছাড় পুলিশের এনকাউন্টারে ধরাশায়ী হয়েছে সশস্ত্ৰ তিন ‘মার’ উগ্রপন্থী। ঘটনা আজ বুধবার ভোররাতে কাছাড় জেলার অন্তর্গত ধলাই বিধানসভা এলাকাধীন ভুবন পাহাড়ে সংঘটিত হয়েছে। এনকাউন্টারে নিহতদের দুজন কাছাড় এবং একজন মণিপুরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। তবে তাদের নামধাম কিংবা কোন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য সে সম্পৰ্কে এ খবর লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।

ধলাই থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার বিকাল প্রায় পাঁচটা নাগাদ পূর্ব ধলাইয়ের জনবহুল আমড়াঘাট কৃষ্ণপুরের গঙ্গানগর এলাকায় একটি অটো রিকশা থেকে তিন মার উগ্রপন্থীকে গ্রেফতার করেছিল কচুদরম থানার পুলিশ। সূত্রটি জানিয়েছে, সন্দেহের বশে তিন জনজাতি জনগোষ্ঠীয় যুবক-পরিবাহী অটো রিকশার গতিরোধ করে পূর্ত সড়কে টহলদারি সাদা পোশাক পরিহিত পুলিশকর্মীরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

তিন যুবকের কথাবার্তায় অসংগতি পেয়ে পুলিশ তাদের আটক করে। অটো রিকশায় পুলিশ যখন তালাশি চালিয়েছে, তখন সুযোগ বুঝে এক যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে কচুদরম থানার ওসি খনেন্দ্র নাথ কামান্ডো বাহিনী নিয়ে অভিযান চালিয়ে পলাতক তৃতীয় যুবককে পাকড়াও করেন।

ইত্যবসরে অটো রিকশায় একটি নাইলনের বস্তা থেকে একে ৪৭ সিরিজের অত্যাধুনিক একটি রাইফেল উদ্ধার করে পুলিশ। রাইফেল সহ তিন যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। থানায় তাদের টানা জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকেন পুলিশ আধিকারিকরা।

এদিকে ঘটনার খবর পাঠানো হয় কাছাড় জেলা সদর শিলচরে পুলিশ সুপার নোমাল মাহাতোর কাছে। পুলিশ সুপার মাহাতো অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সহ সশস্ত্র পুলিশ ব্যাটালিয়ন নিয়ে ছুটে যান কচুদরম থানায়।

রাতভর জিজ্ঞাসাবাদের প্ৰদত্ত স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে মধ্য রাতে তিন যুবককে নিয়ে তাদের ডেরা তথা লুকিয়ে রাখা আরও আগ্নেয়াস্ত্রের সন্ধানে পুলিশ সুপার নোমাল মাহাতোর নেতৃত্বে বাহিনী ছুটে যায় ভুবন পাহাড়ের ঘন জঙ্গলে। জঙ্গলে পৌঁছামাত্র পুলিশ বাহিনীকে লক্ষ্য করে পাহাড়ের আড়াল থেকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়। জবাবে পাল্টা গুলি চালায় আাসাম পুলিশ ব্যাটালিয়নও।

প্রায় ঘণ্টাখানেক গেরিলা যুদ্ধ-সদৃশ উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। গুলিতে বিদ্ধ হয়ে ধরাশায়ী হয় ধৃত তিন মার উগ্রপন্থী। এছাড়া উভয় পক্ষের গোলাগুলিতে পুলিশের দু-একজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে স্থানীয়দের কাছে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১১টা নাগাদ পূর্ব ধলাই এলাকার সোনাই উজানের অসম-মিজোরাম সীমান্তবর্তী চেকারচামে সেনা পোশাক পরিহিত অজ্ঞাতপরিচয় প্রায় চার-পাঁচ বন্দুকধারী গুলি চালিয়েছিল। ওইদিনের গুলিকাণ্ডের ঘটনায় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত ছিলেন বিরাজ করছিল। ওই ঘটনার পর সোনাইয়ের সার্কল অফিসার তথা প্রশাসনিক ম্যাজিস্ট্রেট, সোনাইয়ের সার্কল ইনস্পেক্টর, কচুদরম থানার ওসি এলাকায় কড়া নজরদারি চালিয়েছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *