নিজস্ব প্রতিনিধি, গন্ডাছড়া, ২ জুলাই:
ছাত্র-ছাত্রীদের হাতের নাগালে শিক্ষা ব্যবস্থা পৌঁছে দিতে শহর থেকে গ্রাম-পাহাড় বর্তমান সরকার সর্বত্র কাজ করে যাচ্ছে। যাতে করে একজনও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়। কিন্তু সরকারের এই প্রচেষ্টা থেকে রইস্যাবাড়ি দয়ারামকামী হাইস্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা বঞ্চিত।
এলাকার অভিভাবকরা জানান ১৯৯৩ সালে স্কুলটি স্থাপিত হয়। পরবর্তী সময় ২০১৯ সালে দয়ারাম কামী স্কুলটিকে হাই স্কুলে রূপান্তরিত করা হয়। এরপর ২০২৪ সালে প্রথম বারের মতো এই বিদ্যালয় থেকে ৩৩ জন ছাত্রছাত্রী ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসে। এর মধ্যে ৩১ জন পাশ করে এবং দুইজনের একটি করে বিষয়ে ব্যাক আসে। এদিকে চলতি বছরের শুরুতেই দয়ারাম কামী হাই স্কুলটিকে দ্বাদশ মানে উন্নীত করার জন্য এলাকাবাসীদের দাবি মেনে শিক্ষা দপ্তর বিশেষ উদ্যোগ নেয়।
এ মোতাবেক রইস্যাবাড়ি আই এস এর মাধ্যমে উনার বিডিও মারফত একটি রেজুলেশন ধলাইজেলা শিক্ষা অধিকর্তার নিকট পাঠানো হয়। পরবর্তী সময় জেলা শিক্ষা অধিকর্তার অফিস থেকে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে হস্তান্তর করা হয়। এরপর আজ অব্দি এ বিষয়ে আর কোন খবর নেই। এদিকে পাস করা ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের স্কুলেই একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ার সুযোগ পাবে ভেবে নিয়ে স্কুল ড্রেস থেকে শুরু করে বই সবকিছুই কিনে নেয়। কিন্তু রাজ্য শিক্ষা দপ্তর দয়ারাম কামি হাই স্কুলটিকে দ্বাদশ মানে উন্নীত না করায় উক্ত বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মহাবিপদে পড়েছে।
কারণ রইস্যাবাড়ি এলাকাতে বাংলা মাধ্যমের কোন দ্বাদশ মানের বিদ্যালয় নেই। যদিও বিদ্যাজ্যোতি প্রকল্পের আওতায় রইস্যাবাড়িতে একটি ইংলিশ মিডিয়াম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় রয়েছে। তাতে বাংলা মিডিয়ামের ছাত্র ছাত্রীরা গিয়ে পড়াশোনা করতে অসুবিধা হয়। তাছাড়া এলাকার জুমিয়া পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা বাইরের কোন স্কুলে গিয়ে পড়াশুনা করার মত তাদের সামর্থ্য নেই। এ করতে করতে দুই মাস কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা কোন স্কুলে ভর্তি হতে পারছে না।
এমতাবস্থায় ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অভিভাবকরা ভীষণভাবে চিন্তিত। তাইতো তারা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে দেখার জন্য করজোড়ে শিক্ষামন্ত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাক্তার মানিক সাহার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আর তাদের দাবি মানা না হলে আগামী দিনে রাস্তা অবরোধ থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুশিয়ারি দেন।
এখন দেখার মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যন্ত এলাকার জনজাতি ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তার দিকে তাকিয়ে আছেন ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক মহল।