আগরতলা, ৩০ মে: রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তাই শীঘ্রই আগরতলা আরেকটি সিভিল হাসপাতাল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওই হাসপাতালের পরিচালনায় থাকবে আগরতলা পুর নিগম। আজ কাঁসারীপট্টিস্হিত পুর নিগমের পুরনো অফিস পরিদর্শনকালে এমনটাই দাবি করলেন স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে।
এদিনের পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, কমিশনার শৈলেশ কুমার যাদব সহ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা রাজীব দত্ত, ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ সঞ্জীব কুমার দেববর্মা, ভারপ্রাপ্ত পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক অধিকারের অধিকর্তা ডাঃ অঞ্জন দাস প্রমুখ।
এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, রাজ্যে দুটি রেফারেল হাসপাতাল জিবি ও আইজিএম’এ রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সে কথা মাথায় রেখে শহরে আরেকটি হাসপাতাল গড়ে তোলার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। যে হাসপাতালটির পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে আগরতলা পুর নিগম।
এদিন তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৮ হাজার স্কোয়ার ফিট এলাকা চিহ্নিত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এনবিসিসি ভবনের একতলা ও দোতলা মিলিয়ে এই সিভিল হাসপাতাল গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে রাত আটটা অবধি বহির্বিভাগ চালু করার কথা প্রাথমিকভাবে চিন্তা করা হয়েছে। সে সঙ্গে এখানে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট অন্তর্বিভাগে পরিষেবা প্রদান করা যায় কিনা সে নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর থেকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক ,প্যারামেডিকেল স্টাফ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে । তার উপর ভিত্তি করে আগামী দিনে এর পথ চলা শুরু হবে।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, জিবি হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার এবং আইজিএম হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ১২০০রেও বেশি রোগী আসছেন। তাই এই হাসপাতাল গুলির উপর চাপ কমিয়ে দিতে এই সিভিল হাসপাতালটি কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করবে। এখানে বহির্বিভাগে পরিষেবা প্রদান করা হবে। বহির্বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি রোগ নির্ণয় পরীক্ষার বন্দোবস্ত করা হবে। পরবর্তী পর্যায়ে অন্তর্বিভাগের কথা ভাবনা চিন্তা করা হবে। মহকুমাভিত্তিক হাসপাতালে যে পরিষেবা প্রদান করা হয়, সেই রকম পরিষেবা প্রদান করা যায় কিনা সেটা জায়গার উপর বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । সুপার স্পেশালিটি পরিষেবা প্রদান করা হবে জিবিপি ও আইজিএম হাসপাতালেই। আগরতলা পুর নিগমের মাধ্যমে এই হাসপাতাল রূপায়ণ করা হবে। আগরতলা পুর নিগম এর দায়িত্বে থাকবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর প্রথম কয়েক বছর প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে। আগরতলা পুর নিগম এলাকায় অবস্থিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি এই সিভিল হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।এই বিষয়ে আগরতলা পুর নিগম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পর যে প্রস্তাব স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরকে প্রেরণ করবে, তার ভিত্তিতেই দপ্তর ভূমিকা গ্রহণ করবে।
স্বাস্থ্য সচিব জানান, রাজ্যের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের লক্ষ্যে গত কয়েকদিনে বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন করেছেন। তিনি যে নির্দেশগুলি দিয়েছেন তা কার্যকর করার চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সেই বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই আজকের এই উদ্যোগ। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর থেকে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি, চিকিৎসক ,প্যারামেডিকেল স্টাফ ইত্যাদি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে । খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এই হাসপাতাল গড়ে তোলার সমস্ত ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।