দুর্গাপুর, ১৮ মে (হি. স.): উত্তরপ্রদেশ টু বাংলাদেশ সীমান্ত। নির্বাচনে নাকা চেকিংয়ের পরও ফের রাজ্যে নিষিদ্ধ কফ সিরাপ পাচারকারীরা সক্রিয়। আর মাদক পাচারকারীদের কি করিডর আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চল? কার্যত সেই প্রশ্ন আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠল রাজ্যজুড়ে। এবার ময়দার বস্তার আঁড়ালে ফেনসিডিল পাচার। গোপনসূত্রে খবর পেয়ে শনিবার ১৯ নং জাতীয় সড়কের ওপর দুর্গাপুর ডিভিসি মোড়ে এসটিএফের জালে ধরা পড়ল প্রচুর ফেনসিডল বোঝাই লরি। ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে তদন্তকারী দল।
ঘটনায় জানা গেছে, ময়দা বোঝাই ওই লরিটি উত্তরপ্রদেশ থেকে জঙ্গীপুর যাচ্ছিল। মাঝপথে রা়ঁচিতে ফেনসিডিল ভর্তি প্রচুর পেটি লোড করা হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, শনিবার বিকাল নাগাদ ট্রাকটিকে ধাওয়া করে এসটিএফের একটি দল। দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ থানার ডিভিসি মোড়ে ট্রাকটিকে ধরে ফেলে এসটিএফ। ট্রাকে অভিযান চালাতেই চোখ কপালে ওঠে এসটিএফের কর্তাদের। ময়দার বস্তার আড়ালে রয়েছে বহু ফেন্সিডিলের পেটি। ট্রাকটিকে আটক করে তল্লাশী শুরু করা হয়। আটক করা হয় ট্রাকের চালক ও খালাসিকে। জানা গিয়েছে, প্রায় কুড়ি হাজার নিষিদ্ধ ফেন্সিডিল রয়েছে। যা বাংলাদেশে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মুলত, ওই কফ সিরাপ নেশা করার কাজে ব্যবহার হওয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে আমাদের দেশে। তবে কালোবাজারে ওই কফ সিরাপ ৫০০ টাকা দরে বিকোয়। আবার বাংলাদেশে ওই কফ সিরাপের চাহিদা রয়েছে প্রচুর। সেখানে হাজার টাকা প্রতি বোতল কালোবাজারে বিকোয়। তাই মোটা টাকা মুনাফার আশায় বাংলাদেশে মুলত বেশী পাচার হয়। আর এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, এরাজ্য নিষিদ্ধ কফ সিরাপ পাচার কি আবারও সক্রিয়? উল্লেখ্য, গত ৪ ফেব্রুয়ারী বুদবুদে প্যাকেট এলাচ পরিবহন গাড়িতে এসটিএফের জালে ধরা পড়ল সাড়ে ৯ হাজার নিষিদ্ধ কফ সিরাফ ফেনসিডিল। ঘটনায় দুদিনে ২ জনকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। গত ২০২৩ সালের ১ ও ২ অক্টোবর দুর্গাপুর এবিএল ও গান্ধী মোড়ে ২০ হাজার ফেনসিডিল বাজেয়াপ্ত করে এসটিএফ। জানা গেছে, সেগুলি বাংলাদেশে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তার আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি পাচারের আগে কাঁকসার বাঁশকোপা টোলপ্লাজার কাছে ৬ হাজার ফেনসিডিল বাজেয়াপ্ত করে এসটিএফ। ওই ফেনসিডিল মুর্শীদাবাদ হয়ে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ঘটনায় রুবেল শেখ ও আলামিন শেখ নামে দুই পাচারকারী লিফটার সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
২০২২ সালে ৩০ জুন ১৯ জাতীয় সড়কের অন্ডালের ভাদুর মোড়ে এসটিএফের তল্লাশীতে উদ্ধার হয় ১০ হাজার বোতল নিষিদ্ধ কফ সিরাপ। ঘটনায় ভানু প্রতাপ সিং, ধীরেন্দ্র প্রতাপ সিং ও দীপ সিং নামে ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উত্তর প্রদেশ থেকে আগ্রা থেকে বনগাঁ হয়ে বাংলাদেশে পাচার করার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ওই কফ সিরাপ গুলি। তারপর এদিনের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, আসানসোল, দুর্গাপুর, পানাগড়কে আন্তঃরাজ্য মাদক পাচারকারীরা কি করিডর হিসাবে ব্যাবহৃত করছে? যদিও পুলিশ জানিয়েছে, “ধৃতদের হেপাজতে নেওয়া হবে। কোথায় পাচার হচ্ছিল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে।”