নিজস্ব প্রতিনিধি, ধর্মনগর, ২১ ফেব্রুয়ারি: উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরে বুধবার যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নানা অনুষ্ঠানে শামিল হন ভাষা প্রেমিক অসংখ্য মানুষজন। ধর্মনগরের বিবেকানন্দ সার্ধ শতবার্ষিকী ভবনে মাতৃভাষা দিবস সাড়ম্বর পালিত হয়েছে।
এদিন প্রদীপ জ্বালিয়ে এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন। উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি ভবতোষ দাস, পুরো পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎ দে সরকার, বিশিষ্ট সমাজসেবী শ্যামল নাথ, সিনিয়র তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উত্তর জেলার ডেপরি ডাইরেক্টর দিলীপ দেববর্মা সহ অন্যান্যরা।
উদ্বোধক বিশ্ববন্ধু সেন যারা মাতৃভাষার জন্য জীবন বলিদান করেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। বিস্তৃত আলোচনা করতে গিয়ে বলেন যেভাবে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে চলেছে তাতে বাংলা ভাষা কয়েক প্রজন্ম পরে কতটুকু অক্ষত থাকবে তা নিয়ে বলা মুশকিল।
বর্তমান অভিভাবকরা বাংলা ভাষায় ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা না করিয়ে ইংরেজি মাধ্যম এবং দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দি কে অগ্রাধিকার দিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে ।এক্ষেত্রে বাংলা ভাষাকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। এটা কোনমতেই সুখকর নয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে উন্নীত করে বাঙালি জাতিকে একটা বিশেষ মর্যাদা আসনে বসিয়েছিল।
দুই দুইটি দেশের জাতীয় সংগীত বাংলা ভাষায় চলছে। তারপরও একটা অংশের অভিভাবক বাংলা ভাষাকে প্রকৃত মর্যাদা দিতে রাজি নয়। তারা ইংরেজিতে কথা বলতে অনেক বেশি সচ্ছলতা দেখিয়ে প্রকৃতপক্ষে বাংলা ভাষার অমর্যাদা করে চলেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন শুধুমাত্র নির্ধারিত পাঠক্রম নয় আরো অন্য কিছু পড়াশোনার দরকার এখনকার সমাজব্যবস্থায়।
তা না হলে নিজেদেরকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিষ্ঠিত করা খুবই কষ্টকর ব্যাপার। তাই ছাত্রছাত্রীদের নির্ধারিত পাঠ্যক্রমের বাইরে আরো অন্য কিছু পড়াশোনা করার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। অনুষ্ঠানের প্রাথমিক পর্যায়ে সম্পন্ন হওয়ার পর দ্বিতীয় পর্যায়ে কবি সাহিত্যিকদের আসর শুরু হয়। এখানে বাংলা ভাষায় দক্ষ স্থানীয় কবি সাহিত্যিকরা তাদের শৈল্পিক নৈপুণ্য তুলে ধরেন।