গোসাবা, ৩১ জানুয়ারি (হি. স.) : প্রতি বছরের মত বুধবার ৩১ জানুয়ারি বিজেপির তপশিলি মোর্চার তরফে মরিচঝাঁপি দিবস পালন করা হল। সুন্দরবনের গোসাবা ব্লকের অন্তর্গত কুমিরমারি দ্বীপের উল্টোদিকে পাড়ে মরিচঝাঁপির জঙ্গলে শহীদদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করলেন বিজেপি নেতৃত্বরা। জঙ্গলে ব্যানার, বিজেপির দলীয় পতাকা লাগিয়ে শহীদদের শান্তি কামনা করলেন তাঁরা।
পাশাপাশি কুমিরমারি দ্বীপের মৃধাঘেরি এফ পি স্কুল মাঠে সভা করে বিজেপি। সেখানেও শহীদ বেদিতে শহীদদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। এদিন মরিচঝাঁপি দিবস পালন কর্মসুচিতে ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা, রাজ্য তপশিলি মোর্চার সভাপতি সুদীপ আদিত্য দাস, বিধায়ক চন্দনা বাউরি, মুকুটমনি অধিকারী, অম্বিকা রায়, জুয়েল মুর্মূ সহ বিজেপির জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব।
১৯৭৯ সালে তৎকালীন বাম সরকারের সময় মরিচঝাঁপি গনহত্যার ঘটনা ঘটেছিল। ২৪ শে জানুয়ারি থেকে ৩১ শে জানুয়ারি পর্যন্ত মরিচঝাঁপি দ্বীপের উদবাস্তু কলোনির মানুষদের উপর নির্বিচারে হামলা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর বহু বছর কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত মরিচঝাঁপি গণহত্যার সঠিক তদন্ত হয়নি। সত্য প্রকাশিত হয়নি বলেই দাবি বিজেপির।অভিযোগ তৎকালীন বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর নির্দেশে এই গনহত্যা হয়েছিল। সেই ঘটনায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিবছর বিজেপির তপশিলি মোর্চার তরফে এই দিনটি পালন করা হয় মরিচঝাঁপি দ্বীপে।
পাশাপাশি উল্টোদিকের দ্বীপ কুমিরমারিতে সভা ও শহীদদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠান হল এদিন। কুমিরমারির সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাহুল সিনহা সহ বিজেপির নেতৃত্বরা বারে বারে বলেন, তাঁরা উদ্বাস্তুদের পাশে আছেন। বাংলাদেশ থেকে আগত যে ছিন্নমূল উদবাস্তুদের পাশে রয়েছে বিজেপি। সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেসরা সকলে উদ্বাস্তুদের বিরুদ্ধে। তাই এঁরা সকলেই সি এ এ আইনের বিরোধিতা করছে।
রাহুল বলেন, “ বিজেপি উদ্বাস্তুদের পক্ষে। তাই বাংলাদেশ থেকে আগত ছিন্নমূল উদ্বাস্তুদের তাঁদেরকে এখানে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকার সি এ এ পাশ করিয়ে সেই আইন লাগু করার পথে। আমরা মরিচঝাঁপি গনহত্যার প্রতিবাদ জানাই। সিপিএম, তৃণমূলরা উদ্বাস্তুদের বিপক্ষে তাই সি এ এ নিয়ে বিরোধিতা করছে।” সুদীপ আদিত্য বলেন, “ ক্ষমতায় আসার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মরিচঝাঁপি গণহত্যার ফাইল ওপেন করবেন। ঘটনার তদন্তে কমিশন গঠন করবেন। কিন্তু কিছুই করেন নি। আসলে সিপিএম, তৃণমূল, কংগ্রেস সব মিলেমিশে রয়েছে। এঁরা কেউ চান না সত্য প্রকাশিত হোক।”
মরিচঝাঁপি দিবসে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিজেপি ধর্না, ডেপুটেশন কর্মসূচি পালন করছে এদিন। মহকুমাশাসকের দফতর, জেলাশাসকের দফতরে চলছে কর্মসূচি। একটাই উদ্দেশ্য মরিচঝাঁপির সঠিক তদন্ত হোক। হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিদের দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে মরিচঝাঁপির তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। সুদীপ আদিত্য আরও বলেন, “ আমরা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করবো মরিচঝাঁপির ইতিহাস উন্মোচনের জন্য। তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।”