নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ জানুয়ারি : ১৪ জানুয়ারি ভারত জড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করতে চলেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। এই ন্যায় যাত্রা হবে মনিপুর থেকে মুম্বাই পর্যন্ত।
বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানালেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস কমিটির মুখপাত্র ডলি শর্মা।
তিনি বলেন, গত ১০ বছর ধরে দেশে অন্যায়কাল বিরাজ করছে। কেন্দ্রের বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার থেকে মানুষ যদি কিছু পেয়ে থাকে তাহলো ধোঁকা পেয়েছে। আর সরকার যদি কিছু দিয়ে থাকে তাহলে তা হল মানুষের পেছনে ছুরি মেরেছে। এই সরকার গত দশ বছরে দেশের লোকতন্ত্রকে আঘাত করেছে। তারা গোটা দেশকে হাতের মুঠোয় নিতে যেসব রাজ্যে বিজেপি নেই সেসব রাজ্যে বিধায়কদের কিনে কিংবা সেখানে জোর করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে বেকারত্ব গত ১০ বছরে তিনগুণ বেড়েছে। যা গত ৪৫ বছরে রেকর্ড।
আরো বলেন, বিশ্বের মধ্যে জিনিসের মূল্য কমলেও একমাত্র ভারতে শুধুমাত্র জিনিসপত্রের মূল্য লাফিয়ে বেড়েছে। কিন্তু মানুষের আয় বাড়েনি। মানুষের সমস্যায় সমাধান করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতেই রাহুল গান্ধী এই ভারত জুড়ো কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। সকলকে রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা কর্মসূচিতে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান তিনি।
এ দিনের আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আশীষ কুমার সাহা সহ অন্যান্যরা।
উল্লেখ্য, মণিপুর থেকে কংগ্রেসের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু করার অনুমতি দিয়েছে মণিপুর সরকার। তবে সীমিত সংখ্যক অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে এই কাজটি করতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে মণিপুর সরকার। প্রস্তাবিত এই যাত্রা শুরু হবে ২৪ জানুয়ারী এবং শেষ হবে ২০ মার্চ।এখানকার হাপতা কেংজেইবুং ময়দান থেকে যাত্রা শুরু করার জন্য কংগ্রেস আবেদন জানানোর আটদিনের মাথায় রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুমোদন মিললো।
যেকোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এই যাত্রার সূচনা লগ্নে সীমিত সংখ্যক অংশগ্রহণকারীর উপস্থিতিকে অনুমোদন দিয়ে এক আদেশ জারি করা হয় ইম্ফল পূর্ব জেলার ম্যাজিস্ট্রেটের অফিস সূত্রে। অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা এবং নামধাম আগেই কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে যাতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
এর আগে ইম্ফল পূর্ব জেলার এসপি একটি প্রতিবেদন জমা দিয়ে জানান,বড় ধরনের জমায়েত হলে সেটি আইনশৃঙ্খলা অবনতির কারণ হতে পারে।তাছাড়া ইম্ফল পূর্ব জেলায় সিআরপিসি’র ১৪৪ ধারা বলবত রয়েছে।এর আওতায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ এড়ানো সম্ভব নয়।প্রসঙ্গত,তেসরা মে মণিপুরে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকেই সেখানে ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে।
জাতিগত সহিংসতা কেড়ে নিয়েছে ১৮৫টি প্রাণ এবং আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ। এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। এই অবস্থায় ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার মতো একটি সমাবেশ বেশ স্পর্শকাতর বিষয় হতে পারে বলে আদেশনামায় জানানো হয়।