গোসাবা, ১৬ ডিসেম্বর (হি.স.) : দীর্ঘ ৬০ বছরের পুরাতন ভ্যান স্ট্যান্ড রাতের অন্ধকারে দখল হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন ভ্যান ও টোটো চালকরা। এই বিষয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোন সমাধান সূত্র মেলেনি। উল্টে তাঁরা পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়ছেন। আর সেই কারণে নিজেদের স্ট্যান্ডের জমি ফেরত চেয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন টোটো ও ভ্যান চালকরা। শনিবার সকাল দশটা নাগাদ পাখিরালা গোসাবা রাস্তার টাইগার মোড়ে বিক্ষোভ দেখান শতাধিক ভ্যান ও টোটো চালকরা। শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ ওঠে। তবে সমস্যার সমাধান না হলে আগামীদিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোসাবা পাখিরালয় রাস্তার টাইগার মোড় এলাকায় একটি টোটো ও ভ্যান স্ট্যান্ড রয়েছে। প্রায় ৬০ বছরের পুরাতন এই স্ট্যান্ডেই যাত্রী ওঠা নামানোর জন্য দাঁড়ায় টোটো, সাধারণ ভ্যান ও মোটর ভ্যান। কিন্তু মাস দুয়েক আগে সেই স্ট্যান্ডের জায়গা দখল করে কিছু দোকান তৈরি করেছেন এলাকার কিছু মানুষ। টোটো চালক, ভ্যান চালকদের অভিযোগ এলাকার তৃণমূল নেতাদের মদতেই এই সরকারি জায়গা দখল করে দোকান করেছেন পাশের জমির মালিকরা। এরফলে টোটো, ভ্যান দাঁড়ানোর সমস্যা দেখা দিয়েছে। এদিকে শীত পড়তেই সুন্দরবনে পর্যটকদের আনাগোনা অনেকটাই বেড়েছে। ফলে নির্দিষ্ট স্ট্যান্ড না থাকায় এই টাইগার মোড় এলাকায় রাস্তার উপরেই যাত্রী ওঠা নামা করতে হচ্ছে। এতে রাস্তায় যানজট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে পর্যটকদের যাতে কোন অসুবিধা না হয় সে কারণে গত কয়েকদিন ধরে এখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প তৈরি করেছে গোসাবা থানা। অভিযোগ সেই ক্যাম্পের পুলিশ কর্মীরা শুক্রবার বিকেলে কয়েকজন টোটো চালক, ভ্যান চালককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাঁদের ভ্যান, টোটো সরিয়ে দেন। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে টোটো ও ভ্যান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানা ও প্রশাসের অন্যান্য স্তরে জানানো হয়। কিন্তু কোন সমাধান বের হয়নি। উল্টে শনিবার সকালে ফের টোটো ও ভ্যান রাস্তায় দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাতে গেলে বাঁধা দেয় পুলিশ। তখনই কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীদের সাথে বচসা বাধে টোটো ও ভ্যান চালকদের। এরপরেই রাস্তা অবরোধ করে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বিক্ষোভের পর পুলিশ প্রশাসন দ্রুত সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দিলে ওঠে অবরোধ। গোসাবা ও রাঙাবেলিয়া টোটো, অটো ও মোটরভ্যান কল্যান সমিতির সম্পাদক জালাল মোল্লা বলেন, “ অন্যায় ভাবে পিছনের জমির মালিকরা এই টোটো ও ভ্যানের স্ট্যান্ড দখল করে দোকান তৈরি করেছেন। দুমাস ধরে এই ঘটনার কথা জানিয়েছি প্রশাসনের সমস্ত স্তরে কিন্তু কোন লাভ হয়নি। সরকারি জায়গা দখল করে দোকান তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের কথা কেউ ভাবে নি। উল্টে পুলিশ আমাদেরকে হেনস্থা করছে। সেই কারণে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। সমস্যা না মিটলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো।” পুলিশ জানিয়েছে, সমস্যা আপাতত মিটেছে। অভিযুক্ত দোকানদারকে টোটো ও ভ্যান স্ট্যান্ডের জায়গা ছাড়ার নির্দেশ ও দেওয়া হয়েছে।