এনসিএইচএসি–র আসন্ন নির্বাচনে সব কয়টি আসনে জয়ী হবে বিজেপি, দাবি দেবোলালের

হাফলং (অসম), ১৪ ডিসেম্বর (হি.স.) : উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদ (এনসিএইচএসি)–এর আসন্ন নির্বাচনে পরিষদের মোট ২৮টি আসনের সব কয়টিতে বিজেপি প্রার্থীরা জয়লাভ করবেন। জোরের সঙ্গে এই দাবি করেছেন উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কাৰ্যনিৰ্বাহী সদস্য (সিইএম) দেবোলাল গাৰ্লোসা।

আজ বৃহস্পতিবার নিজের সরকারি বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে দেবোলাল গার্লোসা বলেন, পুনরায় উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের ক্ষমতায় ফিরবে বিজেপি। তিনি বলেন, উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদে ক্ষমতাসীন বিজেপি ডিমা হাসাও জেলায় শান্তি ও উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করেছে। আগামী দিনেও বিজেপি এই পাহাড়ি জেলার শান্তি ও উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করে যাবে।

দেবোলাল বলেন, আগামী ৮ জানুয়ারি ত্রয়োদশ উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের ২৮টি আসনে নির্বাচন। ভোট গণনা ও ফলাফল ঘোষণা হবে ১২ জানুয়ারি। অতএব বিহুর আগেই পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে বিজেপি পরিষদ গঠন করবে বলে দাবি করে দেবোলাল গার্লোসা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে পাহাড়ি জেলার বিকাশে আমরা কাজ করে যাব। তিনি বলেন, আগামী দু-এক দিনের মধ্যে বিজেপি নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করবে। ১৮ কিংবা ১৯ ডিসেম্বর বিজেপির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকাও প্রকাশিত হবে।

বিজেপিতে প্রার্থী-কেন্দ্রিক কোনও সংঘাত নেই জানিয়ে দেবোলাল বলেন, পরিষদের অধিকাংশ আসনে প্রার্থিত্বের দাবিদার একাধিক হলেও কোনও বিরোধ নেই। এই দাবি করে সিইএম গার্লোসা বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে সকলেরই টিকিট চাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে টিকিট পাবেন শুধু একজনই। আর প্রার্থিত্বর বিষয়টি ঠিক করবে দল। তবে বিজেপি মুখ দেখে এবার কাউকে টিকিট প্রদান করবে না। যাঁদের প্রতি জনতার সমর্থন রয়েছে এবং যে সব নেতা জনগণের মধ্যে থেকে কাজ করছেন তাঁদেরই টিকিট প্রদান করবে দল। তবে তিনি আশাবাদী, যাঁরা টিকিট থেকে বঞ্চিত হবেন তাঁরা সমাজ ও দলীয় স্বার্থে দলের বিরুদ্ধে যাবেন না।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে ডিমা হাসাও জেলা বিজেপির নির্বাচন কমিটির চেয়ারপার্সন তথা রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হাফলং এসে দলের জেলাস্তরের নেতৃবর্গ, মণ্ডল কমিটি, বিভিন্ন এনজিও এবং ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন। তাছাড়ী পরিষদের প্রত্যেক আসনেই দলের অবজার্ভার গিয়ে সব বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রার্থিত্বের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

দেবোলাল গার্লোসা আরও বলেন, দল যদি তাঁকে পরিষদের ২৮টি আসনের মধ্যে যে কোনও আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে বলে তা-হলে তিনি যে কোনও কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত। তা হাফলং, মাহুর বা পূর্ব মাইবাং, যে কোনও আসনই হোক না-কেন।

এবারের নির্বাচনে বিজেপি যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, যদি পরিষদের ক্ষমতায় ফিরে, তা-হলে তিনি কি পুনরায় মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য হবেন, এই প্রশ্নের উত্তরে দেবোলাল বলেন, দল এবং জনগণ চাইলেই তিনি পুনরায় মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য হবেন।

এদিকে নিরঞ্জন হোজাই উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে সামাজিক মাধ্যমে যে খবর ভাইরাল হয়েছে, তার সত্যতা সম্পর্কে দেবোলাল গার্লোসা বলেন, প্রত্যেক রাজনৈতিক নেতারই মুখ্য কার্যনির্বাহী সদস্য পদে বসার ইচ্ছা থাকে। তবে এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, দল সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, বর্তমানে বিজেপিতে নিরঞ্জন হোজাইয়ের কী ভূমিকা রয়েছে আমার জানা নেই। তবে বিজেপি দলে নিরঞ্জনকে কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি বলে সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট করেছেন দেবোলাল গার্লোসা।

তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল যাতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এই আহ্বান জানান দেবোলাল গার্লোসা।