আপডেট: লোকসভায় নিরাপত্তায় লঙ্ঘন; ভিজিটর গ্যালারি থেকে সদনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন দুই ব্যক্তি, পাকড়াও উভয়েই

নয়াদিল্লি, ১৩ ডিসেম্বর (হি.স.) : সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে গেল। ‘তানাশাহি নেহি চলেগা’— এই স্লোগান দিতে লোকসভার গ্যালারি থেকে লাফিয়ে পড়লেন দু’জন। বুধবার লোকসভায় শীতকালীন অধিবেশনে ‘জ়িরো আওয়ার’-এ হুলস্থুল ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওই দু’জনকে ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের জন্য গ্রেফতার করে দিল্লির পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এক জন অমল শিন্ডে। তাঁর বাড়ি মহারাষ্ট্রে। অন্য জনের নাম নীলম সিং। তিনি হরিয়ানার বাসিন্দা। দিল্লি পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন সাগর শর্মা নামে এক জন। তিনিই পুরো ঘটনায় ‘নেতৃত্ব’ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।

বুধবার দুপুরে সংসদে তখন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বক্তৃতা করছিলেন। আচমকা দেখা যায়, দুই যুবক সভার মাঝে লাফিয়ে পড়েন। বেঞ্চের উপর উঠে দাঁড়িয়ে পড়েন তাঁরা। সাংসদেরাও আসন ছেড়ে উঠে পড়েন। দুই যুবক তখন স্লোগান দিতে দিতে হলুদ রঙের গ্যাস ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন। মুহূর্তের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। তবে দুই যুবককে আটকান দু’জন সাংসদ। এক জন আরএলপি এবং আর এক জন বিএসপির সাংসদ।

এই ঘটনা নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ কার্তি চিদম্বরম জানান, তিনি প্রাথমিক ভাবে ভেবেছিলেন দর্শক গ্যালারি থেকে কেউ পড়ে গিয়েছেন। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যক্তি লাফ দেওয়ার পরে তিনি বুঝতে পারেন নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে কেউ ঢুকে পড়েছে। তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “দুই যুবক গ্যালারি থেকে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। তাঁরা এমন কিছু একটা ছুড়েছিলেন যা থেকে গ্যাস নির্গত হচ্ছিল। আমাদের দুই সাংসদের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের বার করে নিয়ে যান।’’

অধীর জানান, ওই ঘটনার জেরে দুপুর ২টো পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘এটি অবশ্যই নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়। কারণ, বুধবারই সাংসদরা ২০০১ সালে সংসদ হানায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের মৃত্যুবার্ষিকী পালন করছিলাম আমরা।’’ অন্য দিকে, পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে হলুদ ধোঁয়া নির্গত ‘ক্যান’ নিয়ে প্রতিবাদ করার সময় এক যুবক এবং এক মহিলাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের মধ্যে নীলমের বয়স ৪২ বছর। অমলের বয়স ২৫। তাঁদের দু’জনকে পরিবহণ ভবনের সামনে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় নিরাপত্তায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও পর্যন্ত যে তথ্য মিলছে, তাতে জানা যাচ্ছে, ওই দুই ব্যক্তির সঙ্গে ছিল ‘স্মোক গ্রেনেড’। বস্তুত, বুধবারই সংসদে হামলার ২২ বছর পূর্তি। ওই দিনই এই হামলার ফলে দুইয়ের মধ্যে কোনও যোগ আছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *