ডিএ বাধ্যতামূলক নয়, বাড়তি ছুটি তো পাচ্ছেন, কড়া বার্তা মমতার

কলকাতা, ২৯ নভেম্বর, (হি.স.): কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে সমান হারে মহার্ঘ ভাতা তথা ডিএ-র দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এখনও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এইহ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের দায়ের করা একটি মামলাও ঝুলে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এই অবস্থায় বিধানসভায় ফের একবার মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট তার রায়ে জানিয়েছিল, ডিএ সরকারি কর্মচারীদের দেওয়া দয়ার দান নয়, তা পাওয়া কর্মচারীদের অধিকার। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, “মহার্ঘ ভাতা দেওয়া রাজ্য সরকারের কাছে বাধ্যতামূলক নয়”। কিন্তু বুধবার মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের কড়া ভাষায় জানিয়ে দিলেন, “ডিএ বাধ্যতামূলক নয়, অপশন মাত্র।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের মনে করিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বছরে বাড়তি ছুটি পান। এমনকী, তাঁদের বিদেশে যাওয়ারও সুযোগ করে দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

বুধবার তৃণমূলের কালা দিবসে কালো পাড় শাড়িতে বিধানসভায় উপস্থিত হন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তৃণমূলের সকল বিধায়কের পরনেও ছিল কালো পোশাক। তবে বিরোধীরা কেউ উপস্থিত ছিলেন না অধিবেশনে। বিরোধীশূন্য অধিবেশনে মমতা আরও একবার ডিএ নিয়ে মুখ খোলেন। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য সরকার কী কী করেছেন, তার খতিয়ানও তুবে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “গত ২ বছরে ২ লক্ষ ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে। নতুন পে কমিশনের হিসেবে ডিএ দেওয়া হয়েছে।” সঙ্গে মনে করিয়ে দেন, “মহার্ঘ ভাতা কিন্তু বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক।”

রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বারবার অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার ৪০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দিচ্ছে। অথচ রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা এর চেয়ে অনেক কম হারে ডিএ পান। এমনকী, তাঁদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতাও মেটায়নি নবান্ন। এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্রের কর্মচারীরা কেন্দ্রের স্ট্রাকচার অনুযায়ী চলে। সেই অনুযায়ী বেতন, ডিএ পায়। কেউ চাইলে (কেন্দ্র সরকার) ওখানে যোগ দিতে পারে।”

এর পরই তাঁর সংযোজন, “ভুলে গিয়েছেন, বছরে তাঁরা ৩-৪ দিন বাড়তি ছুটি পান। আমাদের এখানে যে ৪০ দিন ছুটি পান এটাও তো ভ্যালু অ্যাড করতে হবে। এই সরকারই একমাত্র বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে।”

সরকারি কর্মচারীদের পেনশন দেয় রাজ্য সরকার। সে কথা মনে করিয়ে মমতা বলেন, “একমাত্র রাজ্য বাংলা যারা সরকারি কর্মচারীদের পেনশন দেয়। অনেকে বলেছে বন্ধ করে দাও তাহলে সুদের টাকার পরিমাণ কমে যাবে। আমি বলেছি না, ৬০ বছর একটা জীবন না। আরও ২০-৩০ বছর মানুষ বাঁচে। তাঁরা সংসার চালাবে কীভাবে?” এই প্রথম না এর আগেও মহার্ঘ ভাতা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

বিধানসভা ভোটের সময়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় প্রচারে এসে জানিয়েছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে সপ্তম বেতন কমিশন চালু হবে এবং কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাবেন।

মমতা এদিন বলেন, “ভোটের সময়ে অনেকে অনেক কিছু বলে যান। অনেকে (বামেরা) এখন অনেক কথা বলছেন। ওদের সময়ে ডিএ কত বাকি ছিল? বামফ্রন্ট সরকার যে দেনা করে গিয়েছে, তা আমাকে শোধ করতে হচ্ছে। আমাদের সরকার পঞ্চম বেতন কমিশনকে মান্যতা দিয়ে ৯০ শতাংশ বরাদ্দ করেছে। ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা দিয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *