ডম্বুর জলাশয় থেকে মা ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার : আটক দুই, স্থানীয় মানুষের থানা ঘেরাও, উত্তেজনা, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ

আগরতলা, ২১ নভেম্বর : ডম্বুর জলাশয় থেকে মা ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। বীরগঞ্জ থানায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কিন্তু, ওই দুইজনকে জনগণের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে আজ স্থানীয় মানুষ থানা ঘেরাও করেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা থানা ভাংচুরের চেষ্টাও করেন। ফলে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে। তাতে, কয়েক মহিলা আহত হয়েছেন। কিন্তু, অমরপুরের এসডিপিও দেবাঞ্জলি রায় ওই অভিযোগ খন্ডন করেন বলেন, উত্তেজিত জনতাকে বাগে আনতে শুধুই কাঁদানে গ্যাস ছুড়া হয়েছে। লাঠিচার্জ করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ২২ অক্টোবর গোমতী জেলায় বীরগঞ্জ মহকুমার তিন গড়িয়া এলাকা থেকে মা ও মেয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় মহিলার স্বামী যুগল কিশোর জমাতিয়া ওম্পি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। গত ৩১ অক্টোবর ডম্বুর জলাশয় থেকে রূপাশ্বরী জমাতিয়ার পঁচাগলা মৃতদেহ বস্তাবন্দী অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল। তার ঠিক দুই দিন পর ২ নভেম্বর ডম্বুর জলাশয় থেকেই তাঁর ১২ বছরের নাবালিকা কন্যার মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছিল। যুগল কিশোর পুলিশের কাছে বয়ান দিয়েছিলেন, স্থানীয় মানুষ তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে এক ব্যক্তির সাথে বাইকে চেপে অমরপুর নতুন বাজার পাহাড়পুর এলাকা দিয়ে যেতে দেখেছিলেন।

ওই ঘটনায় পুলিশ তদন্তে নেমে নতুন বাজার রাস্তায় পাহাড়পুর এলাকা থেকে টিআর০৩এল৮৮৮৫ নম্বরের বাইকটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল। অবশেষে গতকাল রাতে অভিযানে নেমে আজ ভোরে দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে এবং বীরগঞ্জ থানায় তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছে পুলিশ। এদিকে, ওই খবর পেয়ে স্থানীয় মানুষ থানার সামনে জড়ো হোন এবং অপরাধীদের চরম শাস্তির দেওয়ার জন্য তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য আবদার করতে থাকেন। ওই আবদার মেনে নেওয়া সম্ভব নয়, পুলিশ তাঁদের অনেকবার বুঝিয়েছে এবং ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু, তাঁরা পুলিশের কথায় ফিরে যাওয়ার বদলে থানা ঘেরাও করেন এবং বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ হটাৎ সকলকে লক্ষ্য করে লাঠিচার্জ করেছে এবং কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। তাতে, বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এ-বিষয়ে অমরপুর এসডিপিও দেবাঞ্জলি রায় বলেন, ডম্বুর জলাশয় থেকে মা ও মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে। তাঁদের বীরগঞ্জ থানায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এরই মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ জন স্থানীয় মানুষ থানার সামনে জড়ো হোন এবং ওই দুই জনকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তাঁরা শুধু থানা ঘেরাও করেই থেমে থাকেননি। তাঁরা থানা ভাংচুরের চেষ্টা করেছেন। তাই, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে পুলিশ ৬-৭ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে। তাঁর দাবি, লাঠি চার্জের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। কাঁদানে গ্যাস ছুড়ার ফলে কেউ আহত হননি। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, বলেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *