নিয়োগে অনিয়মের দায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের ওপর বর্তালেন মানিক

কলকাতা, ১৬ নভেম্বর, (হি.স.): বৃহস্পতিবার প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে বিস্ফোরক দাবি করলেন ধৃত প্রাক্তন পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এদিন মানিকবাবুর জামিনের মামলার শুনানি ছিল।

সেখানেই তাঁর আইনজীবী দাবি করেন, “নিয়োগের প্যানেল তৈরি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। নিয়োগে কোনও অনিয়ম হয়ে থাকলে সেটা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের মাধ্যমেই হবে। ফলে অনিয়মের সঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনওভাবে জড়িত নয়।” অর্থাৎ নিয়োগ মামলায় কোনও দুর্নীতি হয়ে থাকলে তার দায়ভার মানিকের নয়, বরং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলির। এদিনের শুনানিতে আইনজীবী মারফৎ মানিক ভট্টাচার্য এমনটাই দাবি করেছেন।

আদালতে মানিকবাবুর আইনজীবী জানান, নিয়োগ মামলায় পর্ষদের তালিকায় নাম ছিল না এমন ৯৮ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। ওই বিষয়ে হাইকোর্টের অন্য বেঞ্চে মামলা চলছে। আইনজীবী বলেন, “এর থেকেই তো স্পষ্ট নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে সরাসরি পর্ষদ সভাপতির কোনও যোগ নেই।”

এর পরই মানিকবাবুর কাছে বিচারপতি জানতে চান, পর্ষদ সভাপতির অনুমতি ছাড়া কীভাবে নিয়োগ সম্ভব? এজলাসে মানিকবাবু বিচারপতিকে বলেন, “নিয়োগের প্যানেল জেলা শিক্ষা সংসদ থেকে তৈরি হয়। ফলে এর সঙ্গে পর্ষদ সভাপতির কোনও সম্পর্ক নেই।”

বিচারপতি জানতে চান, “আপনার আমলে কতজন নিয়োগ হয়েছে।” মানিকবাবু জানান, ৪৪ হাজার। এর মধ্যে কতজনের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে মানিক জানান, “৯৮ জনের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই বিষয়ে পর্ষদ কিছুই জানতো না। নিয়োগ হয়েছে জেলা থেকে।”

এদিন আদলাতে মানিকবাবুর আইনজীবীর আরও দাবি, “নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে সরাসরি টাকা নেওয়া বা এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য প্রমাণ এখনও আদালতে পেশ করতে পারেনি ইডি, সিবিআই। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।”

পাল্টা হিসেবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জামিনের বিরোধিতা করে জানানো হয়, মানিকবাবু যা বলছেন, তার ভিত্তিতে স্পষ্ট নিয়োগ মামলার দুর্নীতির শিকড় আরও গভীরে। এ বিষয়ে তাঁকে আরও জেরার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *