(আপডেট) যুবক, যুবতী, বৃদ্ধার দেহ পড়ে পানাগড়ের বাড়িতে, খুন বলে সন্দেহ

দুর্গাপুর, ১০ নভেম্বর (হি. স.) : দুই ঘরে নাতনি ও দিদিমার নিথর দেহ, বাথরুমে নাতির দেহ! মেয়ের বাড়িতে এসে খুন নাতি, নাতনিসহ বৃদ্ধা মা। দিনদুপুরে হেলমেট পরা লোক ঘর থেকে বেরিয়ে গেলেও টের পেল না প্রতিবেশী। নিরব থাকল বাড়ীর সারমেয়। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাকে ঘিরে বিস্তর রহস্যের দানা বেঁধেছে পানাগড় রেলপার সারদাপল্লীতে। ঘটনার তদন্তে নেমেছে ফরেন্সিক দল ও পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃতদের নাম সিমরন বিশ্বকর্মা(২৩), বাড়ি পানাগড় সারদাপল্লীতে। বৃদ্ধা সীতা দেবী (৭০), সনু বিশ্বকর্মার (২১) বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। ঘটনায় জানা গেছে, সিমরনের বাবা ধনঞ্জয় বিশ্বকর্মা পেশায় কর্মকার। পানাগড় বাজারে তার কামারশাল রয়েছে। গত সোমবার অসুস্থ তার বড় মেয়েকে দেখতে সস্ত্রীক আসামে গেছেন ধনঞ্জয়। বাড়িতে তার বিবাহ বিচ্ছেদ ছোট মেয়ে সিমরন ছিল। দেওয়ালির জন্য তার শ্বাশুড়ি সিতা দেবী ও শ্যালকের ছেলে সনু এসেছিল। বেলা গড়ালেও বাড়িতে কোনও সাড়া না পাওয়ায় বেলা ১১ টা নাগাদ তার বাড়ির বাথরুমের সামনে সনুর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে প্রতিবেশীরা। তারপরই বাড়ির ভেতর নজরে পড়ে দুই আলাদা রুমে সীতা দেবী ও সিমরনের নিথর দেহ। তারপরই খবর দেওয়া স্থানীয় কাঁকসা থানায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌ়ছায় পুলিশ। ঘটনায় তাদের প্রতিবেশী অর্থাৎ ধনঞ্জয়ের বৌদি ও দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। তারপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফরেন্সিক দল। গোটা ঘটনায় বিস্তর রহস্যের দানা বাঁধে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,” সকালে হেলমেট পরা ব্যাক্তি মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে। ধনঞ্জয়ের বৌদি জানান,” বাড়ির পিছনের দিকে কাজ করছিলাম। কিভাবে হয়েছে কিছু বুঝতে পারিনি।” ধনঞ্জয়ের দাদা রাজু বিশ্বকর্মা পেশায় জীবন বিমা এজেন্ট। তিনি বলেন,” ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে গিয়েছিলাম। খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখি ভাইয়ের বাড়ির মর্মান্তিক ঘটনা।” মৃতদেহ দেখে অনুমান শ্বাসরোধ করে খুন হয়েছে। প্রশ্ন, কে বা কারা খুন করল? কেন একই পরিবারের তিনজনকে খুন করল? একই পরিবারের তিনজন খুন হল অথচ আশপাশের কেউ টের পেল না। এমনকি বাড়ির সারমেয়টিও কেন চিৎকার করল না। শুধু তাই নয়, বাড়ির মোবাইল ফোনগুলিও রহস্যজনকভাবে গায়েব। তাহলে কি মোবাইল ফোনে ঘটনার রহস্য লুকিয়ে রয়েছে? গোটা ঘটনাটি রহস্যে মোড়া।
জানা গেছে, সিমরনের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। তাহলে কি পারিবারিক শত্রুতার কারনে খুন? পরিচিত কেউ রাত্রে বাড়িতে এসেছিল? যে কারনে বাড়ির সারমেয় কোন চিৎকার করেনি। দুস্কৃতীই প্রমান লোপাটের জন্য খুন করে মোবাইল ফোন নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে? যদিও এদিন খবর পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এদুন দুপুরে ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলের নমুনা সংগ্রহ করে। মৃতদেহের শরীরে দাগ ও অন্যান্য আঘাতের নমুনা সংগ্রহ করে।

এদিন, আসানসোল-দুর্গাপুর ডিসি (পুর্ব) কুমার গৌতম জানান,” ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিক অনুমান শ্বাসরোধে মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *