দুর্গাপুর, ১০ নভেম্বর (হি. স.) গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই প্রাক্তন তৃণমূল যুবনেতা বাড়িতে পুলিশি তান্ডবের অভিযোগ। বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর যুবনেতাকে অপহরনের চেষ্টা। পাল্টা প্রতিরোধ গ্রামবাসীদের। ঘটনার প্রতিবাদে পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও গ্রামবাসীদের। বৃহস্পতিবার রাত থেকে দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াল বুদবুদ থানার দেবশালা কলমডাঙায়। অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের। অনিয়মের প্রতিবাদ করায় রোষের মুখে। শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে আউশগ্রামের দেবশালা অঞ্চলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করেছে। বছর দুয়েক আগে দেবশালা যুব তৃণমূল কর্মী চঞ্চল বক্সী খুনে রহস্যের নতুন মোড় নেওয়া শুরু করে। আব্দুল লালন ও অরূপ মিদ্যা তৃণমূলের ওই দুই ব্লকস্তরের নেতার চাপানউতোরে ঘটনার রহস্য ক্রমশ প্রকাশ্যে চলে আসে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বৃহস্পতিবার রাতে আবার গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে। এবার যুব তৃণমূল কর্মী খুনে জামিনে ছাড়া পাওয়া কাদের মন্ডল ও তার ছেলে আশানুর মন্ডলের বাড়িতে রহস্যজনকভাবে পুলিশি তান্ডবের অভিযোগ ওঠে। গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া আশানুর মন্ডল নামে প্রাক্তন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
এদিন বহিস্কৃত তৃণমূল নেতা কাদের মন্ডল জানান,” গতকাল রাত্রে আচমকায় আউশগ্রাম থানার একদল পুলিশ পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢোকে। বাড়ির দরজা শাবল দিয়ে ভেঙে ছেলেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমরা, গ্রেফতারের নথী ও কারন জানতে চাওয়া বেপরওয়া লাঠিচার্জ শুরু করে। বাড়ীর মহিলাদেরও মারধর করে। শেষ পর্যন্ত গোটা গ্রামের লোকজন রুখে দাঁড়াতে পুলিশ পালিয়ে যায়।” শুক্রবার সকালে ঘটনার প্রতিবাদে দেবশালা ফাঁড়ি ঘেরাও করে কাদের মন্ডলের অনুগামীরা। ফাঁড়িতে বিক্ষোভ দেখায়। দেবশালার কলমডাঙা বুদবুদ থানার আওতায়। অভিযোগ, স্থানীয় থানাকে না জানিয়ে আউশগ্রাম থানার পুলিশ অভিযান চালিয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশের ব্যাবহৃত লাঠিও পড়ে ছিল। যদিও আউশগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনা অস্বীকার করে জানিয়েছে, এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি। কোনরকম অভিযান হয়নি। প্রশ্ন, তাহলে কোন থানার পুলিশ অভিযান চালালো?
আক্রান্ত কাদের মন্ডল বলেন,” দুবছর আগে দেবশালায় চঞ্চল বক্সীকে খুনে ব্লকেরই তৃণমূল নেতা আব্দুল লালন আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর পঞ্চায়েতের বিভিন্ন দুর্নীতি নিয়ে ছেলে সরব হয়েছে। আব্দুল লালন প্রভাব খাটিয়ে সরকারি কাজের বরাত পায়। কাজ না করে কাজের পেমেন্ট তুলে নেয়। সেসব অনিয়মের প্রতিবাদ করতেই বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে জুলুম ও অত্যাচার।”
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল লালন বলেন,” দাগি আসামী। কুখ্যাত দুস্কৃতী দলের বহিস্কৃত। তাদের অভিযোগের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন মনে করি না। আইন আইনের পথে চলবে। পুলিশ প্রশাসন তাদের কাজ করেছে। তাতে আমার কোন যোগ নেই।”