মাকে কুড়াল দিয়ে মেরে নিজ ঘরেই মৃতদেহ নিয়ে তিনদিন কাটালেন ছেলে

ধর্মনগর, ৬ নভেম্বর : গর্ভধারিণী মাকে নিজ হাতেই খুন করে চূড়ান্ত পৈশাচিকতার পরিচয় দিল সন্তান। পৈশাচিক আচরণ এখানেই থেমে থাকেনি। মায়ের মৃতদেহ ঘরে রেখেই কাটিয়েছেন তিনদিন। ধর্মনগর থানাধীন রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাজু দেবনাথের নারকীয় কর্মকান্ডে শিহরণ জেগেছে গোটা রাজ্যে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সোমবার সকালে ধর্মনগর থানাধীন রাধাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শান্তি দেবনাথের বাড়িতে ইলেকট্রিক বিল দেওয়ার জন্য বিদ্যূৎ কর্মী এসেছিলেন। তিনি দেখতে পান শান্তি দেবনাথের ঘরের দরজা বন্ধ। ছাপ ছাপ রক্তের  দাগ এবং একটা পচা গন্ধ অনুভব হতেই তিনি ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপরই তিনি আশপাশের  বাড়িগুলিতে গিয়ে এলাকাবাসীদের এই ব্যাপারে খবর দেন। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ধর্মনগর থানায় দুপুর একটার দিকে একটা ফোন আসে। খবর পেয়ে ধর্মনগর থানার পুলিশ শান্তি দেবনাথ এর বাড়িতে যায়। এলাকাবাসী সহ ধর্মনগর থানার পুলিশ ঘর থেকে রাজু দেবনাথ (৩০ বছর) বেরিয়ে আসে বলেন। ঘরের মধ্যে পুলিশ সহ এলাকাবাসী প্রবেশ করার পর রক্তাক্ত অবস্থায় শান্তি দেবনাথের (৬৫) দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। সাথে সাথে পুলিশ রাজু দেবনাথকে গ্রেফতার করেছে। 

প্রাথমিকভাবে শান্তি দেবনাথের বাড়িতে ওসি নাড়ুগোপাল দে গেলেও পরবর্তী সময় সেখানে ছুটে গিয়েছেন ধর্মনগর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক দেবাশীষ সাহা এবং ফরেন্সিক টিম। রাজু দেবনাথ স্বীকার করেছে, শুক্রবার রাতে কুড়াল দিয়ে মাকে খুন করেছেন তিনি। বাড়ির মধ্যে একটি গর্ত করেছিল। ওই গর্তে তার মার মৃতদেহ লুকিয়ে রাখবে স্থির করেছিল। কিন্তু উপযুক্ত সময়ের অভাবে মার মৃতদেহ লুকিয়ে রাখার মত সুযোগ পাননি তিনি। 

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, শান্তি দেবনাথের স্বামী গিতেন্দ্র দেবনাথ আগরতলায় থাকেন এবং এক মেয়ে সোমা দেবনাথ হাফলং-এ তার শ্বশুর বাড়িতে রয়েছেন। এই বাড়িতে শান্তি দেবনাথ এবং তার ছেলে রাজু দেবনাথ থাকতেন। রাজু প্রায়ই তার মা শান্তি দেবীকে মারধর করত বলে এলাকাবাসীর দাবি। শান্তি দেবনাথের মৃতদেহ আজ ধর্মনগরের উত্তর জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হবে। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ মৃতার স্বামী এবং মেয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ধরনের পৈশাচিক ঘটনায় এলাকাবাসীরা স্তম্ভিত।