ধর্মনগর, ২০ অক্টোবর: দুর্গাপূজা মানে বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আনন্দ উৎসব। পূর্ব কামেশ্বরের ঘোষ বাড়িতে পাঁচ পুরুষ ধরে মায়ের পূজা চলছে। এখনো মহা ধুমধামে আশপাশের গ্রামগুলির মানুষের সমারোহে চলে এই পূজা। আনন্দমুখর সমাবেশে বিভিন্ন গ্রামবাসীদের মধ্যে ঐক্যের যোগ সূত্র রচনা করে শুরু হয়েছে এই ঘোষ পরিবারের ঐতিহ্যবাহী পূজা।
বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা উৎসব এর প্রচলন হয়েছিল সেই ব্রিটিশ আমল থেকে। ধর্মনগরের পূর্বকানমশ্বরে প্রতাপশালী ঘোষ বাড়ির পূজা এবার নিয়ে পাঁচ পুরুষে চলছে। সম্ভবত ১৮৭৬ সালে এই ঘোষ বাড়ির পূজার আয়োজন শুরু হয়েছিল। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে প্রায় দেড়শ বছর। যখন শুরু হয়েছিল তখন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য তারপর তা রূপ নেয় পূর্ব পাকিস্তান, সেই পূর্ব পাকিস্তান থেকে হয়ে যায় স্বাধীন বাংলাদেশ।
তখন তাদের স্থায়ী ঠিকানা ছিল বাংলাদেশের মৌলভীবাজার। আস্তে আস্তে মৌলভীবাজার থেকে সমপরিবারে তারা ভারতবর্ষের পূর্ব কামেশ্বরে এসে স্থায়ী ঠিকানার সন্ধান পায়। এই দুর্গাপূজা শুরু হয়েছিল রাজীব ঘোষের আমল থেকে। তারপর আসলো মাধব ঘোষ, মাধব ঘোষের পর শংকর ঘোষ, শংকর ঘোষের পর খিরোদা ঘোষ বর্তমানে কাজল ঘোষ। খিরোদা ঘোষের পাঁচ ছেলে এবং তিন মেয়ে। দুই ছেলে এখনো লন্ডনে বসবাস করছে। তবে পূজা আসলে তাদের প্রত্যেকেই নিজ বাড়ি ধর্মনগরের পূর্ব-কামেশ্বরে এসে হাজির হয়।
দুর্গাপূজা মানে বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আনন্দ উৎসব। এই অনাবিল আনন্দের সময় সবাই তাদের নিজ বাড়ি পূর্ব-কামেস্বরে এসে কয়েকটা দিন অনাবিল আনন্দে দিন যাপন করে। তাদের বাড়ির পুজো বর্তমানে কয়েকটি গ্রামের পুজো হয়ে দাঁড়িয়েছে। কামেশ্বর গ্রাম পঞ্চায়েত ,গঙ্গানগর গ্রাম পঞ্চায়েত, টঙ্গীবাড়ী গ্রাম পঞ্চায়েত, বাগবাসা গ্রাম পঞ্চায়েত এবং শনিছড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষ একত্রিত হয় এই পূজা কে কেন্দ্র করে। প্রতিদিন হাজারের উপর মানুষ তাদের অন্ন গ্রহণ করে এ পূজা কে কেন্দ্র করে। বাড়ির নাম রয়েছে, নির্জলা ভবন। নির্জলা ভবনের এই ঘোষ বাড়ির পূজা একটি ঐতিহ্যবাহী উত্তর জেলা তথা রাজ্যের মধ্যে একটি পূজা বলে বিবেচিত। আনন্দমুখর সমাবেশে বিভিন্ন গ্রামবাসীদের মধ্যে ঐক্যের যোগ সূত্র রচনা করে শুরু হয়েছে এই ঘোষ পরিবারের ঐতিহ্যবাহী পূজা।

