নয়াদিল্লি, ১৯ সেপ্টেম্বর (হি.স.): খালিস্তানি জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জর খুনের ঘটনায় ভারত যোগের অভিযোগে সে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয় ভারতের কূটনীতিককে। যা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হতেই এবার পালটা পদক্ষেপ করল দিল্লি। জাস্টিন ট্রুডো সরকারের পদক্ষেপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারতে থাকা কানাডার কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে দিল্লি। কানাডার যে কূটনীতিক ভারতে রয়েছেন, আগামী ৫ দিনের মধ্যে তাঁকে এ দেশ ছাড়তে হবে বলে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়েছে। আগামী ৫ দিনের মধ্যে ভারতে থাকা কানাডার কূটনীতিককে দিল্লি ছাড়তে হবে বলে এস জয়শঙ্করের দফতরের তরফে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ বছর জুন মাসে খলিস্তানপন্থী সংগঠন ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’ বা কেটিএফের প্রধান তথা কানাডার সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বার সাহিবের প্রধান হরদীপ সিং নিজ্জর খুন হন। দুই অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ী ৪৬ বছরের নিজ্জরকে গুরুদ্বার চত্বরের মধ্যেই গুলি করে খুন করে পালিয়ে যান। সেই ঘটনার তদন্তে ভারতের হাত খুঁজে পেয়েছে কানাডা। অন্তত, কানাডার পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশনে তেমনই দাবি করেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রু়ডো। অভিযোগ ছিল, তাঁর সরকারের কাছে হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারত সরকারের এজেন্টদের যোগ থাকার বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ রয়েছে। কানাডার তদন্তকারী সংস্থাগুলি এ বিষয়ে আরও বিশদে তদন্ত করছে বলেও জানিয়েছেন ট্রুডো। পাশাপাশি কানাডার প্রধানমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন যে, বিষয়টি নিয়ে জি২০ শীর্ষ সম্মেলন চলাকালীন তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও কথা হয়েছে। পাল্টা জবাব দিতে দেরি করেনি নয়াদিল্লি। কঠোর ভাষায় কানাডার পদক্ষেপের সমালোচনা করে সমস্ত অভিযোগকেই কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে কড়া বিবৃতি জারি করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘‘আমরা কানাডার পার্লামেন্টে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দেখেছি এবং তা প্রত্যাখ্যান করেছি। পাশাপাশি, সে দেশের বিদেশমন্ত্রীর বক্তব্যকেও একই ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি।’’ তার পর সেই বিবৃতিতে স্পষ্ট লেখা হয়েছে, ‘‘কানাডার মাটিকে ব্যবহার করে ভারতের কোনও রকম হিংসাত্মক ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একই ধরনের অভিযোগ কানাডার প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছেও করেছিলেন এবং তা সম্পূর্ণ ভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।’’ এই ঘটনায় ভারতে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছে নয়াদিল্লি। মঙ্গলবার তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কানাডার দূতাবাসে কর্মরত এক সিনিয়র কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হচ্ছে। ওই সিনিয়র কূটনীতিককে পাঁচ দিনের মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে।