আগরতলা, ২৯ আগস্ট : খোয়াই মহকুমার চেবরী প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বর্তমানে চিকিৎসকের সংকটে ধুঁকছে। এর ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পরিষেবা। তার উপর বহি:বিভাগের আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক ও দন্তের চিকিৎসক প্রতি সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন অনুপস্থিত থাকেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। যে সকল মানুষ হোমিওপ্যাথিক ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা পরিষেবার নেন তারা চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে পরিষেবা নিতে পারছেন না। যার ফলে চিকিৎসকের সংকটে ধুঁকছে চেবরী হাসপাতাল।
চেবরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বর্তমানে দুজন চিকিৎসক প্রতিদিনের জন্য জরুরী বিভাগ সামলাচ্ছেন।আবার এরপর রয়েছে প্রতিদিনের জন্য ওয়ার্ড ডিউটি।হাসপাতালটিতে পুরুষ ও মহিলা বিভাগে দশটি করে মোট কুড়িটি শয্যা বা বেড রয়েছে।প্রতিদিন সকাল বিকেল দুইজন চিকিৎসককেই হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সামলাতে হচ্ছে।প্রতিদিন একশো থেকে একশো পঁচিশ ত্রিশজনের মতো মানুষ জরুরী বিভাগে আসছেন চিকিৎসার পরিষেবা নেওয়ার জন্য।ফলে চব্বিশ ঘন্টাই লাগাতার ডিউটি করতে হচ্ছে দুইজন চিকিৎসককে।আর তাই সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।দুইজন চিকিৎসককে আবার হাসপাতালের বহির্বিভাগেও প্রতিদিন বসতে হচ্ছে।সেখানেও রোগীর ভীড় নেহাত্ কম নয়।এম ও আই সি ডাঃ রাহূল পাল ছাড়াও রয়েছেন ডাঃ কৃষ্ণা দেববর্মা।এম ও আই সি ডাঃ পাল জানান, যদিও হাসপাতালটিতে আরো তিনজন রয়েছেন চিকিৎসক।কিন্তু তারা মূলতঃ বহির্বিভাগের দায়িত্বে।এদের মধ্যে একজন করে রয়েছেন আয়ুর্বেদিক দেবল দাস,হোমিওপ্যাথি অনিন্দিতা সাহা ও দন্ত বিভাগে সুস্নাত সূত্রধর।ওদেরকে তো আর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া যায়না।ওয়ার্ডের ডিউটিতেও ওদের পাঠানো যায়না। আবার শনিবার ও সোমবার এদের তিনজনই অনুপস্থিত থাকার কারণে দুদিন ধরে হাসপাতালের বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা কেন্দ্র সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। ফলে মানুষ দুদিন ধরে হাসপাতালের বহির্বিভাগীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে কোনরূপ চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেননা।এম ও আই সি ডাঃ রাহূল পাল জানান, চেবরী হাসপাতালের প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের সংকটের বিষয়টি জেলার মূখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অর্থাৎ সি এম ও ডাঃ নির্মল সরকারের নজরেও নেওয়া হয়েছে।বেশ কয়েকবার জানানো হলেও সি এম ও এখন পর্যন্ত্য শুধু দেখছি , দেখবো বা কি করা যায় দেখি ইত্যাদি দায়সারা গোছের উত্তর দিয়েই তার দায়িত্ব খালাশ করার চেষ্টা করে চলেছেন।এছাড়া তার দিক থেকে অন্য কোন তৎপরতা বা সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ। জানা গেছে যে, চেবরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি বিশাল এলাকা নিয়েই রয়েছে।উত্তরে উত্তর চেবরী , সোনাতলা, দক্ষিণে পূর্ব রামচন্দ্রঘাট , লক্ষীনারায়নপুর, পূর্বে পূর্ব চেবরী ও পশ্চিমে রয়েছে উত্তর রামচন্দ্রঘাট পঞ্চায়েত। এই সবকটি পঞ্চায়েতের মানুষ চেবরী হাসপাতালের ওপর নির্ভরশীল।আর এছাড়া পশ্চিম চেবরী পঞ্চায়েত তো রয়েছেই। এছাড়াও শান্তিনগর পঞ্চায়েতের লোকজনেরাও আসেন এখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিতে।লোকসংখ্যা কমকরেও চল্লিশ- পয়তাল্লিশ হাজার।তাই চেবরী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির গুরুত্ব সর্বাধিক।ফলে বর্তমানে চিকিৎসকের অভাবে ভোগান্তির শিকার সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সর্বস্তরের মানুষজন। আর এদিকে আয়ুর্বেদিক দেবল দাস, হোমিওপ্যাথি অনিন্দিতা সাহা ও দন্ত বিভাগে সুস্নাত সূত্রধর ধরাকে সরাজ্ঞান করে চলেছেন প্রতিনিয়ত। মর্জিমতো চলছেন তারা বলে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে ।
চেবরী হাসপাতালের স্বাভাবিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পরিষেবার মানোন্নয়নে হাসপাতালের চিকিৎসক সংকট দূরীকরণে কার্যকরী ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসীরা স্বাস্থ্য দপ্তরের দায়িত্বে নিয়োজিত মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।এলাকাবাসীর বক্তব্য, মূখ্যমন্ত্রী যেহেতু নিজেও একজন চিকিৎসক, তাই নিজের অতীতদিনের অর্জিত পেশাগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে মূখ্যমন্ত্রী চেবরী হাসপাতালের প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নিয়োগে দ্রুত হস্তক্ষেপ করবেন বলে আশা এলাকাবাসীর।
2023-08-29