কলকাতা, ২৬ আগস্ট (হি স)। যাদবপুরকাণ্ডে ধৃত সৌরভ চৌধুরীই হলেন মাথা। মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে এই দাবি করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। ওই দাবির সপক্ষে প্রমাণ হিসাবে অন্য এক পড়ুয়াকে পাঠানো সৌরভের হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাটেরও উল্লেখও করেছেন তিনি। সৌরভকে ২৫ আগস্ট এবং মনোতোষ ঘোষ, দীপশেখর দত্তকে আগামী ২৬ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সরকার পক্ষের আইনজীবীর দাবি, প্রথম বর্ষের মৃত পড়ুয়াকে আসলে ‘খুন’ করা হয়েছে। ঘটনাটিকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ধৃতদের মুখোমুখি বসিয়ে আরও জেরার প্রয়োজনের কথা জানিয়ে তাঁদের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদবৃদ্ধির আবেদন জানানো হয়। সেই মতো জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন বিচারক।
তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছিলেন, অভিযুক্ত সৌরভকে জেরা করে যাদবপুরকাণ্ডে প্রয়োজনীয় ‘তথ্য’ মিলতে পারে। সেই কারণে গ্রেফতারের আগে এবং পরে, সৌরভকে দু’বার জেরা করেছিলেন খোদ কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। এ বার আদালতেও পুলিশ দাবি করল, সৌরভই আসলে ‘মাথা’।
আলিপুর আদালতে হাজির করানোর পর প্রথমেই তদন্তকারীরা সৌরভকে ‘বাঁচানোর জন্য’ রাতারাতি কী ভাবে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছিল, তা আদালতে তুলে ধরেন। ধৃত তিন জন অর্থাৎ সৌরভ, মনোতোষ ও দীপশেখরকে কাউন্সেলিং করানোর দরকার বলে দাবি করেছিলেন অভিযুক্তদের আইনজীবী। সেই দাবিও মানতে চাননি সরকার পক্ষের আইনজীবী।
তিনি বলেন, চ্যাট থেকে স্পষ্ট, এঁদের নিজেদের মধ্যে ষড়যন্ত্র কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল! এটা খুন। ছাত্রের বাবাও অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর ছেলেকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। কী ভাবে র্যাগিং হয়েছে, তার বিস্তারিত আদালতে জমা করা হয়েছে।
এর পরেই ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার দাবি তোলেন সরকারি আইনজীবী।
মনোতোষ ও দীপশেখরের বিরুদ্ধে পুলিশকে বাধা দেওয়ার মামলা রুজু হয়েছে। এতে জামিন চান তাঁদের আইনজীবীরা। যদিও সরকারি আইনজীবী সেই জামিনের বিরোধিতা করেছে জানান, হস্টেলের এক কর্মী বয়ান দিয়ে জানিয়েছেন, তাকে গেট বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর নেপথ্যে একটা গোটা দল রয়েছে, যাকে ‘ক্র্যাক’ করতে হবে। ‘অভিযুক্তদের বাচ্চা বলা হচ্ছে, কাজটা তো পরিণতদের মতো!’’ এর পর সরকারি আইনজীবীর দাবি মেনে পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয় মনোতোষ এবং দীপশেখরকে।
কেবল ৩০ আগস্ট পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে পাঠানো হয়, যাদবপুরের ছাত্রের খুনের মূল মামলায় মনোতোষ এবং দীপশেখরকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। যদিও নতুন মামলায় ৩০ তারিখ পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতেই থাকবেন তারা।