কোরান অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের গির্জা-বাড়িঘরে আগুন, অবাদে চলছে লুট

ইসলামাবাদ, ১৭ আগস্ট (হি.স.) : পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে খ্রিস্টানদের একের পর এক গির্জায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চারটি গির্জায় হামলা হয়েছে বলে খবর। বাড়িঘর জ্বলছে, খ্রিস্টান মহল্লার বাড়িগুলিতে অবাধে চলছে লুটপাট। বুধবার বিকেল থেকে তাণ্ডব চলছে পাকিস্তানে পাঞ্জাব প্রদেশের শিল্পশহর ফয়সলাবাদ-সহ বেশ কিছু এলাকায়।

পাকিস্তানের পূর্ব পাঞ্জাবের পূর্বাঞ্চলে জারনওয়ালা শহরে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোরান অবমাননার অভিযোগে উঠেছে। যে দুই খ্রিস্টান ব্যক্তির বিরুদ্ধে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ অবমাননার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কোরানের পাতায় অবমাননাকর মন্তব্য করার প্রমাণ মেলায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। অভিযুক্ত একজনের নাম ইয়াসির ভাট্টি, তিনি নিজ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।

কোরানের অবমাননা করার অভিযোগে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে জারনওয়ালা শহরে একের পর এক বাড়ি-গির্জায় হামলা হচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ বলছে, কমপক্ষে চারটি গির্জায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, খ্রিস্টান মহল্লায় গির্জা সংলগ্ন বাড়িঘরেও হামলা চলছে।

ব্লাসফেমি বা ইসলাম ধর্ম অবমাননা পাকিস্তানে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদিও এই আইনে এখনও পর্যন্ত কারও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি। তবে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে এর আগেও পাকিস্তানে এমন তাণ্ডব হয়েছে। উন্মত্ত জনতা বাড়িঘরে আগুন লাগিয়েছে, অবাধে খুন হয়েছে প্রকাশ্য রাস্তায়।

পাকিস্তানের খ্রিস্টান নেতা আকমল ভাট্টি বলেন, একটি মসজিদ থেকে এই আক্রমণের ঘোষণা দেওয়া হয়। এলাকার মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। উন্মত্ত জনতা অন্তত পাঁচটি গির্জায় আগুন দিয়েছে। খালি বাড়িগুলোতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। দামি জিনিস লুট করা হয়েছে। পরে বেশ কয়েকটি বাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।

জারানওয়ালা তহসিলের ধর্মযাজক ইমরান ভাট্টি জানিয়েছেন, ইসা নগরী এলাকায় স্যালভেশন আর্মি গির্জা, ইউনাইটেড প্রেসবিটারিয়ান গির্জা, অ্যালাইড ফাউন্ডেশন গির্জা এবং শেহরুনওয়ালা গির্জায় লুটপাঠ, ভাঙচুর হচ্ছে। ইলাম ধর্ম অবমাননা হয়েছে বলে দাবি তুলে খ্রিস্টানদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। উন্মত্ত জনতা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করছে বিশাল পুলিশবাহিনী।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিন্দা প্রকাশ করেছেন পাঞ্জাব প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে হাজারো পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। হিংসার ঘটনায় কয়েক ডজন লোককে আটক করা হয়েছে।

হামলাকারী উন্মত্ত জনতার বেশিরভাগই মূলত ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান বা টিএলপির সঙ্গে জড়িত। যদিও টিএলপি এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *