চেলিখলায় নাকা চেকিংয়ে পুলিশের উৎকোচ দাবি, দুই যুবককে মারধর, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জুলাই৷৷ পাচার বন্ধ নেই, উল্টো অন্যদের উপর দমন পীড়ণ৷ ঘটনা বিশালগড়ের চেলিখলা এলাকায়৷  নাকা পয়েন্ট সংলগ্ণ এলাকায় রক্তাক্ত  হয়েছে দুই যুবক৷ দূর্ঘটনাকে অন্যরূপ দিয়ে মধ্য রাত পর্যন্ত সড়ক অবরোধ সহ ব্যপক উত্তেজনা নাকা সংলগ্ণ এলাকায়৷ অভিযোগ পাচার বানিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একাংশ পাচারকারীরা নাকা পয়েন্ট তুলে দেওয়ার জন্য অন্য পন্থা অবলম্বন করেছে৷ ঘটনা বিশালগড় থানাধীন চেলিখলা নাকা পয়েন্টে৷ আন্তর্জাতিক অবৈধ পাচার চক্রের মৃগয়া ক্ষেত্রে পরিনত হয়েছে সিপাহীজলা৷ বহিঃ রাজ্য থেকে রাজ্য হয়ে যত নেশা সামগ্রী বাংলাদেশে পাচার হয় তার সিংহ ভাগ সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় হয়ে বক্সনগর এবং সোনামুড়া থানার বিভিন্ন এলাকা দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বলে অভিযোগ৷ পুলিশ এই অভিযোগের উপর সিল-মোহর দিয়ে জেলার দুটি স্থান যথাক্রমে মেলাঘর এবং বিশালগড়ের চেলিখলা এলাকায় ২৪ ঘন্টার জন্য নাকা চেকিং পয়েন্ট বসিয়েছে৷ অভিযোগ যাদের গোপন রফা রয়েছে দিন রাত এই নাকা পয়েন্ট দিয়ে অবৈধ চিনি, বাজি সহ নেশা সামগ্রী বোঝাই গাড়ি নিয়ে দিবিব চলাচল করতে তাদের কোনও অসুবিধা নেই৷ শনিবার রাতে বিশালগড় থানাধীন চড়িলাম কড়ইমুড়া এলাকার প্রদীপ নমঃ ও তার ভাই রাকেশ নমঃ বাইকে চেপে মাণিক্যনগর থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়৷ তাদের মাথায় হেলমেট ছিলো না৷ নাকা পয়েন্টে তাদের  সিআরপিএফ জওয়ানরা আটকানোর চেষ্টা করলে তারা দ্রুতগতিতে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে চেলিখলা বাজারের একটি শাসক দলের পার্টি অফিসের সামনে  দাঁড়ালে স্থানীয়রা দেখতে পায় তাদের নাক মুখ দিয়ে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হচ্ছে৷ পরে স্থানীয়দের খবরে বিশালগড় অগ্ণি নির্বাপক দপ্তরের কর্মীরা আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বিশালগড় মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ আক্রান্তদের দাবি নাকার দায়িত্বে থাকা পুলিশ এবং  সিআরপিএফ জওয়ানরা তাদের মাথায় হেলমেট না থাকায় তাদের কাছে ৫০০ টাকা দাবি করেছে৷ তারা এই টাকা দিতে অসম্মতি জানানোয় পুলিশ এবং  জওয়ানরা তাদের  মারধর করেছে৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহূর্তেই  এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে৷ স্থানীয় কিছু যুবক প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে৷ তারা অভিযোগ করে, নাকায় কামাইরাজ চলছে৷ পাচারের মৃগয়াক্ষেত্রে পৌঁছতে এটাকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করা হয়৷ মধুপুর, বিশ্রামগঞ্জ এসপি অফিস থেকে পুলিশ কর্মীদের নাকার ডিউটিতে দেওয়া হয়৷ রাতে যাদেরই এই নাকা পয়েন্টে ডিউটি থাকে তাদের প্রত্যেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে সকালে বাড়িতে ফেরেন৷ তাই এই নাকা পয়েন্টে পুলিশ ডিউটি করতে খুব পছন্দ করে৷ অবৈধ পাচারের গাড়ি বাদ দিয়ে পুলিশ শুধুমাত্র স্থানীদের হেনস্থা করে বলে অভিযোগ করেন পথ অবরোধকারী যুবকরা৷ ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল সংখ্যায় পুলিশ ও টিএসআর জওয়ানদের নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান বিশালগড় থানার ওসি ইন্সপেক্টর তাপস দাস৷ তিনি অবরোধকারীদের সাথে কথা বলে সড়ক অবরোধ মুক্ত করেন৷ সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ইন্সপেক্টর তাপস দাস বলেন, দুই যুবক দ্রুতগতিতে বাইক বাইকে করে যাওয়ার পথে দূর্ঘটনার কবলে পরে৷ পরে এই দুর্ঘটনাকে অন্য ইস্যু বানিয়ে স্থানীয় কিছু উশৃংখল যুবক এসে নাকায় হামলা করে, রাস্তার উপর বসানো নাকার ট্রলি, পিচের ড্রাম সহ অন্যান্য সব কিছু রাস্তা থেকে উপড়ে ফেলে দেয়৷ কিছুক্ষন পথ অবরোধও করে তারা৷ পরে বিশাল সংখ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে তারা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বলে জানান বিশালগড় থানার ওসি তাপস দাস৷ অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে মধ্যরাত পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিল নাকা পয়েন্ট সংলগ্ণ এলাকাটি৷ তবে যারা এদিন পথ অবরোধ করেছিল তাদের অধিকাংশই অবৈধ পাচার বানিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বলে এলাকা সূত্রে খবর৷ অবৈধ বানিজ্যে ভাটা পরায় তারা দুর্ঘটনাকে অন্যরূপ দেওয়ার এই পন্থাকে অবলম্বন করেছে বলে ধারনা শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মহলের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *