মেঘালয়ের তুরায় ১৪৪ ধারা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক, দাবি রাজ্য প্রশাসনের

শিলং, ২৫ জুলাই (হি.স.) : সিআরপিসি-র ১৪৪ ধারা এবং নৈশ কারফিউ জারির পর মেঘালয়ের তুরা স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছে, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক, দাবি করেছে রাজ্য প্রশাসন।

গতকাল সোমবার রাতে পশ্চিম গারোপাহাড় জেলা সদর তুরায় মিনি সচিবালয় তথা মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে আচমকা হামলা চালায় সন্দেহভাজন জঙ্গিরা। মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা তখন তাঁর কার্যালয়েই ছিলেন। কিন্তু তিনি বা তাঁর কার্যালয়ের কর্মীদের কোনও ক্ষতি না হলেনও পাঁচ পুলিশ কর্মী আহত হয়েছেন। ঘটনাকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে পশ্চিম গারোপাহাড়ের জেলাশাসক গতকাল ২৪ জুলাই রাতে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে সিআরপিসি-র ১৪৪ ধারা জারির পাশাপাশি নৈশ কারফিউ বলবৎ করেছেন। পাশাপাশি তুরা পুর এলাকার সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আজ ২৫ জুলাই বন্ধ থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন জেলাশাসক। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিক্ষক, ছাত্র এবং অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে নোটিশ জারি করে তাঁদের এই নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে পরের দিন (২৬ জুলাই) থেকে নিয়মিত স্কুলে পঠন-পাঠন পুনরায় শুরু করা হবে বলে জানান।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গতকাল রাতে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা তুরায় তাঁর সচিবালয়ে আত্মসমর্পণকারী গারো জঙ্গি সংগঠন ‘আচিক কনশিয়াস হোলিস্টিকলি ইন্টিগ্রেটেড ক্রিমা’ (এসিএইচআইকে বা আচিক) এবং ‘গারো হিলস স্টেট মুভমেন্ট কমিটি’ (জিএইচএসএমসি)-র নেতাদের সঙ্গে ‘প্রত্যাবর্তনমূলক’ রিজার্ভেশন রোস্টার বাস্তবায়ন সম্পর্কে বৈঠকে বসেছিলেন। তখন মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ।

ভিতরে যখন বৈঠক চলছে, তখন আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে অবিরত ইট-পাথরের ঢিল ছুঁড়তে শুরু হয়। পুলিশ উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। বিশৃঙ্খলায় পাঁচ পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা ঘোষণা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী সশরীরে গিয়ে আহত পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের খোঁজখবর নিয়ে চিকিৎসায় যাতে তাঁদের কোনও খামতি না হয়, সেজন্য ডাক্তারদের নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে উত্তাল পরিস্থিতির পর মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা জানান, তাঁদের দাবি-দাওয়া ইত্যাদির সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে সমাধান করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা যখন চলছে, তখন কতিপয় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সহিংসতা অবলম্বন করে। তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

ধারণা করা হচ্ছে, সহিংসতা পরিস্থিতি সৃষ্টির পেছনে গারো উগ্রপন্থীদের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। কেননা, পুলিশের কাছে গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং রয়েছে। তাতে স্পষ্ট, সহিংসতাকে উসকে দেওয়ার জন্য কারা দায়ী, তার সম্পূর্ণ চিত্র রয়েছে ভিডিওয়। আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের জনৈক শীর্ষ আধিকারিক।