নামরূপ (অসম), ১ জুলাই (হি.স.) : অসমকে পেট্রোকেমিক্যালের এক প্রধান রপ্তানিকারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে মুখ্যমন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব শর্মা আজ শনিবার নামরূপে পতাকা নেড়ে আসাম পেট্রোকেমিক্যালস প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশে প্রথম মিথানল সরবরাহ করেছেন৷ একই মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ব্রহ্মপুত্র ভ্যালি ফার্টিলাইজারস কর্পোরেশন লিমিটেড (বিভিএফসিএল), আসাম পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড এবং নামরূপ তাপ কেন্দ্র থেকে শিল্প উৎপাদনের চলাচলের সুবিধার্থে প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি প্রকল্পের অধীনে জয়পুর চারিয়ালি এবং নামরূপ সোনারি তিনালি রাস্তার উন্নয়নের জন্য ভিত্তিপ্ৰস্তর স্থাপন করেছেন।
এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত ১৪ আসাম পেট্রোকেমিক্যালস লিমিটেড (এপিএল)-এর ৫০০ টিপিডি প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেছিলেন। এর পর প্ল্যান্টটি মিথানল উৎপাদন শুরু করেছে। এপিএল-এ উৎপাদিত মিথানল বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে পরিবহণের প্রক্রিয়া উদ্বোধন করতে পেরে আজ তিনি আনন্দিত বোধ করছেন, বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অসমকে পেট্রোকেমিক্যাল হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সরকারকে সাহায্য করবে। এই উন্নয়নের সাথে সাথে এর পণ্য বিদেশে রপ্তানি করার ছাড়াও এপিএল-এর আর্থিক অবস্থানও মজবুত হবে, যোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ড. শর্মা বলেন, বিভিএফসিএলকে শক্তিশালী করার জন্য নয়াদিল্লি ১০০ কোটি টাকা দিয়ে কোম্পানিকে সাহায্য করেছে৷ এছাড়া রাজ্য সরকার সাহায্য করেছে হাসপাতাল নির্মাণে। তিনি বলেন, গত বছর বিভিএফসিএল ৯৮ কোটি টাকা লোকসান করেছিল। কিন্তু এ-বছর ১২ কোটি টাকা লাভ করেছে। যা একটি শিল্পনগর হিসেবে নামরূপকে ক্ষমতায়নের দিকে ইতিবাচক বিকাশের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটা এক আনন্দের খবর, বলেন তিনি।
নাহরকাটিয়ার উন্নয়নে তাঁর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জয়পুর চারিয়ালী থেকে দিল্লিঘাট পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সড়কটির প্রস্থ বিদ্যমান ৫ দশমিক ৫০ মিটার থেকে ৭ মিটার প্রশস্ত করা হয়েছে। তাছাড়া নামরূপে রাস্তার পাশে কংক্রিটের ড্রেন এবং ২০টি আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে।
বলেন, মজবুত আত্মনির্ভর অসমের গড়তে রাজ্য সরকার টাকা দেবে। সে অনুযায়ী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ৩.৭০ লক্ষ সদস্যের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে দেবে সরকার। এর মাধ্যমে তাঁরা আত্মনির্ভর হবেন। এ ক্ষেত্রে সফল হলে প্রত্যেক আত্মনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা পাবেন ২৫ হাজার করে টাকা। এর ঋণ শোধ করবে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্ৰীর আরও ঘোষণা, যুবক-যুবতীদের উদ্যোগ বা ব্যবসার জন্য রাজ্য সরকার প্রথম বছর এক লক্ষ এবং দ্বিতীয় বছরে আরও এক লক্ষ সহ মোট দুই লক্ষ টাকা প্রদান করবে। আগামী ২ অক্টোবর আত্মনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের নিজের নিজের এলাকায় অন্তত দুটি করে গাছের চারা রোপণ করতে আহ্বান জানান তিনি। আজ তিনি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের বিষয়ে উপস্থিত জনতার সামনে তুলে ধরেছেন।
এই অনুষ্ঠানে অন্য বহুজনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস ফতরের প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী বিমল বরা, বিধায়ক প্রশান্ত ফুকন, তরঙ্গ গগৈ, তেরস গোয়ালা, এপিএল-এর চেয়ারম্যান রজনীশ গগৈ প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।