খোঁজ নেই মোটর বাইক নিয়ে করিমগঞ্জের ভারত ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশির


– সন্ধানে কালোঘাম ছুটছে পুলিশের

– অনুষ্ঠিত বিএসএফ-বিজিবি-র ফ্ল্যাগ মিটিং

–প্রশ্ন উঠেছে সুতারকান্দি সীমান্তে বিএসএফ-এর সুরক্ষা ব্যবস্থায়
করিমগঞ্জ (অসম), ২৯ জুন (হি.স.) : সিলেটের রেজিস্ট্রিকৃত মোটর বাইক নিয়ে করিমগঞ্জের ভারত ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশি যুবকের খোঁজ নেই এখনও। বিএসএফ-এর কড়া সুরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ভারত ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশকারীর সন্ধানে করিমগঞ্জ পুলিশের কালোঘাম ছুটেছে। প্রশ্ন উঠেছে সুতারকান্দির আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফ-এর সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে। এভাবে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে বিদেশি এক যুবকের প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে গোটা করিমগঞ্জ জেলায় আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা সম্পৰ্কে আজ বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় দু দেশের সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে।

বুধবার বিকালের দিকে করিমগঞ্জ জেলা সদরের উপকণ্ঠ সুতারকান্দি-শেওলা (বাংলাদেশ) ল্যান্ডপোর্ট দিয়ে ‘সিলেট-হ ১৪-৯৬৩৮’ নম্বরের লাল রঙের হোন্ডা কোম্পানির ‘শাইন’ মডেলের একটি মোটর বাইক নিয়ে বাংলাদেশি যুবক ভারত ভূখণ্ডে প্রবেশের ঘটনায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। গতাকল রাত প্রায় ১১টায় করিমগঞ্জ শহরে অবস্থিত অশোক টেক্সটাইলের সামনে থেকে বাইক উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে তদন্তে মাঠে নেমেছেন বিএসএফ-এর শীর্ষ আধিকারিকরা। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সীমান্তে ছুটে যান করিমগঞ্জের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, ডিএসপি সদর সহ সাধারণ ও পুলিশ প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা।

সূত্রের খবর, বুধবার তখন আনুমানিক ৪.৪০ মিনিট। মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। সে সময় সুতারকান্দি-শেওলা বন্দরের দায়িত্বে ছিলেন ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর ১৬৭ নম্বর ব্যালিয়নের নয় (৯) জওয়ান। বিএসএফ-এর জওয়ানরা কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাংলাদেশের সিলেট ডিভিশনের বিয়ানিবাজার শেওলা সীমান্তের দিক থেকে ১৩৬২ নম্বর পিলার অতিক্রম করে তিন-তিনটি ব্যারিকেড টপকে সিলেটের রেজিস্ট্রিকৃত লাল রঙের বাইক দ্রুতগতিতে অতিক্রম করে সুতারকান্দি বন্দর। বৃষ্টির মধ্যে সঙ্গে সঙ্গে প্রথম ছাউনিতে থেকে বিএসএফ জওয়ানরা দৌড়ে পিছু ধাওয়া করলে ততক্ষণে দ্বিতীয় ছাউনি অতিক্রম করে ফকিরাবাজরের দিকে পালিয়ে যায় বাংলাদেশি যুবক। এর পরই হট্টগোল শুরু হয় সুতারকান্দিতে।

সঙ্গে সঙ্গে খুঁজে নেওয়া হয় সুতারকান্দি আইসিপির সিসিটিভি ফুটেজ। কিন্তু সেখানে সিসিটিভি বিকল থাকায় কোনও তথ্য লাভ করা সম্ভব হয়নি বিএসএফ কর্তৃপক্ষের। এর পর ফকিরাবাজর এবং সেটেলমেন্ট এলাকার দুটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে সিসিটিভির ফুটেজে মাথায় হেলমেট, পিঠে ব্যাগ রেইনকোট পরিহিত একজনকে জাতীয় সড়ক ধরে করিমগঞ্জ শহরের দিকে যাওয়ার দৃশ্য ধরা পড়ে। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত বাংলাদেশি বাইকারের কোনও হদিশ পাচ্ছিল না বিএসএফ এবং পুলিশ।

শহরের একাধিক স্থানে তলাশি চালায় সদর পুলিশ। নাকা চেকিং বসানো হয়। মদনমোহন রোডে অশোক টেক্সটাইল সংলগ্ন এলাকার প্রায় প্রতিটি বাড়ি ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তন্ন তন্ন করে তালাশি চালিয়েও বাংলাদেশি যুবকের সন্ধান পায়নি পুলিশ।

এদিকে বিএসএফ-এর তরফে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করা হলেও ৫২ নম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর তরফ থেকে এ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। তবে ঘটনা সম্পৰ্কে আজ বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় দু দেশের সীমান্ত রক্ষীদের মধ্যে নো-ম্যানস ল্যান্ডে ফ্ল্যাগ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানা গেছে, উদ্ধারকৃত মোটর বাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বরের সূত্র ধরে এর মালিকের সন্ধান বের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজিবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *