দুর্গাপুর, ২৪ জুন (হি. স.) নেতা তুমি কোন দলের! ঘাসফুল না পদ্মফুলের। বিজেপির না তৃণমূলের। বিজেপির শক্তিকেন্দ্র প্রমুখই যুব তৃণমূলের বুথ সভাপতি। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমনই নজিরবীহিন ছবি ধরা পড়ল পুর্ব বর্ধমানের গলসী-১ নং ব্লকের পারাজ অঞ্চলে। আর তাই নিয়ে চরম শোরগোল পড়েছে তৃণমূল -বিজেপি দুই দলে। একই সঙ্গে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
বিজেপি মানেই তৃণমূল। বছর খানেক আগেই পুনরায় তৃণমূলে যোগ দিয়ে বীরভুমে বলেছিলেন মুকুল রায়। আর সেটাই এখন বাস্তবে প্রমান মিলল পুর্ব বর্ধমান জেলার গলসী-১ নং ব্লকের পারাজ অঞ্চলে। নাম জয়দেব বাগদী। পারাজ অঞ্চলের সীগ্রামের বাসিন্দা। পেশায় দিনমজুর। বিজেপির দাবী, ওই অঞ্চলের ১৪ নং শক্তিকেন্দ্রের প্রমুখ। দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সক্রিয় কর্মী। মাস কয়েক আগেও বিজেপির বুথ স্বশক্তিকরন কর্মসূচীর তালিকায় তার নাম দেখা গেছে। বিজেপির শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ ছাড়াও ওই তালিকায় হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ প্রমুখের দায়িত্ব রয়েছে তার ওপর। শুধু তাই নয় গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে বিজেপির সক্রিয় ভুমিকা পালন করেছেন। তার জন্য, তৃণমূলের রোষের মুখেও পড়তে হয়েছে। অভিযোগ, হিংসার ঘটনায় প্রায় মাস দেড়েক গৃহবন্দীও ছিলেন তিনি। আশ্চর্যের বিষয় তিনিই আবার ওই গ্রামের ১৬৮ নং বুথের তৃণমূলের যুব সভাপতি। যুব তৃণমূল কংগ্রেসের পারাজ অঞ্চলের তালিকায় ১০ নং সিরিয়ালে রয়েছে জয়দেব বাগদীর নাম। পাশেই রয়েছে তার মোবাইল নং।
ওই অঞ্চলের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ গরাই বলেন,” জয়দেব বাগদী বহু পুরোনো কর্মী। ২০১৮-১৯ সাল থেকে দেখে আসছি মিটিং, মিছিলে আসে। নিয়মিত পার্টি অফিসে।” তবে যাকে নিয়ে এত বিতর্ক, সেই জয়দেব বাগদী জানান,” আমি বিজেপির শক্তিকেন্দ্র প্রমুখ। বহু প্রতিকুলতা ও লড়াইয়ের মধ্যে বুক ফুলিয়ে দলটা সক্রিয়ভাবে করি। গত ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর আমাদের ওপর অনেক আক্রমণ হয়েছে। গৃহবন্দি ছিলাম। বিজেপি করার জন্য কাজ থেকেও ছাটাই করা হচ্ছিল। মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। পরিস্থিতি এমনই ছিল, বিজেপি করার জন্য বাড়ীর বাইরে হাটে-বাজারে দেখলেই বিজেপিকর্মীদের ওপর হামলা হত। এখনও সেই আতঙ্ক গ্রামে রয়েছে। হুমকির জেরে ভয়ে আতঙ্কে বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক থাকা স্বত্তেও পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির প্রার্থীর মনোনয়ন দিতে পারিনি।”
যুব তৃণমূলের দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন,” বিধানসভা নির্বাচনের পর জোরপুর্বক তৃণমূলের পার্টি অফিসে নিয়ে গিয়েছিল আমাদের। দিনমজুরের কাজ বাঁচাতে তৃণমূলের পার্টি অফিসে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম। সেখানে আমাদের ছবিও তোলে। তবে যুব তৃণমূলের দায়িত্বে রাখার বিষয়ে বিন্দুমাত্র জানি না। আমার কোনরকম অনুমতি নেয়নি। এমনকি আমাকে জানানো হয়নি। কিভাবে নাম সেখানে দিয়েছে, আমার জানা নেই।”
আবার বিজেপির পুর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রমন শর্মা জানান,” এরকম বিষয় জানা নেই। তবে জয়দেব বাগদী বিজেপির সক্রিয় কর্মী। বিজেপির দক্ষ সংগঠক। তার নেতৃত্বে গ্রামে বিজেপির ভালো সংগঠন রয়েছে। গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে বিজেপি ওই গ্রামে অনেকটাই এগিয়ে। তৃণমূল ভয় দেখিয়ে তাকে তাদের তালিকায় নাম রেখে দিয়েছে।”