কলকাতা, ৭ জুন (হি. স.) : করমণ্ডল এক্সপ্রেস ট্রেনের ভয়াবহ দুর্ঘটনার রেশের মধ্যেই বুধবার নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারগুলিকে ডেকেছে রাজ্য সরকার। সরকারি ওই অনুষ্ঠান থেকেই মমতা ব্যানার্জি দুর্ঘটনাগ্রস্ত পরিবারগুলির হাতে আর্থিক সহায়তা দেবেন। কিন্তু রেল দুর্ঘটনায় হতাহত পরিবারের জন্য আর্থিক সহায়তার এই কর্মসূচির জন্য টাকা খরচ করা হবে নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে।
নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের টাকায় ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের পরিবারকে রাজ্য সরকারের এই আর্থিক সহায়তা নিয়ে প্রতিবাদ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার তিনি সংশ্লিষ্ট একাধিক ছবি যুক্ত করে টুইটারে লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার বিল্ডিং অ্যান্ড আদার কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের তহবিল থেকে করোমন্ডেল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে।
সহজ কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিল্ডিং এবং অন্যান্য নির্মাণ শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য অর্থ ছিনিয়ে নিচ্ছে, মঞ্চে ফটো তুলে জনহিতৈষী সাজবেন। তিনি বগটুইতেও একই কাজ করেছিলেন। সেখানে তিনি বীরভূম গণহত্যার শিকারদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য মিড ডে মিলের তহবিল ব্যবহার করেছিলেন, যেখানে মহিলা ও শিশুদের তার দলের লোকেরা জীবন্ত পুড়িয়েছিল।”
বিরোধীদের দাবি, রেলের গাফিলতিতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর এরাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতির হাল কতটা নিম্নগামী সেই তথ্য সামনে আসার পর থেকেই নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। রাজ্যে কাজ না পেয়ে ভিন রাজ্যে কাজের সন্ধানে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যু ও আহত হওয়ার মিছিল দেখে তড়িঘড়ি আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করে দেন মমতা ব্যানার্জি। দুর্ঘটনার পর এক দফা ঘুরে আসার পর মঙ্গলবার আবার ভুবনেশ্বর ও কটকের হাসপাতালে আহতদের সঙ্গে দেখা করেন মমতা ব্যানার্জি। বুধবার আবার ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তাঁর দুর্ঘটনার হতাহতদের পরিবারকে নিয়ে কর্মসূচি রেখেছেন।
সেই ঘোষণার তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তা। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় ছিল, দুর্ঘটনায় আহত না হলেও আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীদের ১০ হাজার টাকা এককালীন অর্থ সাহায্যের পাশপাশি আগামী তিন মাস ২ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এখন সরকার ঠিক করছে, যাত্রীদের মধ্যে যাঁরা কাজের সন্ধানে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিক তাঁদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইগ্রান্ট লেবার ওয়েলফেয়ার বোর্ড আলাদাভাবে এই খরচ বহন করবে বলে ঠিক করা হয়েছে। কিন্তু বিপুল এই আর্থিক বোঝা শেষ পর্যন্ত চাপতে চলেছে নির্মাণ শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের ওপরই।