সাক্ষী হত্যাকাণ্ড : অভিযুক্ত সাহিলের পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল

নয়াদিল্লি, ১ জুন (হি. স.) : দিল্লির রোহিণী আদালত ১৬ বছর বয়সী সাক্ষীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত সাহিলের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ বাড়ল ৩ দিন। বৃহস্পতিবার সাহিলের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে আদালতে পেশ করা হয়। দিল্লি পুলিশ গত ২৯ মে উত্তর প্রদেশের বুলন্দশহর থেকে সাহিলকে গ্রেফতার করে।

খুনের ব্যবহৃত ছুরিটি অভিযুক্ত হরিদ্বার থেকে কিনেছিল বলে দাবি করেছে পুলিশ। খুনের পরও সাহিল পার্কে ঘোরাঘুরি করেছিল, জেরায় স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। খুনের পর দিল্লির রোহনী শাহবাদ ডেয়ারি এলাকায় একটি পার্কে বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকে সে। এরপরই রিঠালায় যায়। প্রমাণ লোপাটের জন্য রিঠালার একটি বনাঞ্চলে ছুরিটি ফেলে দেয় অভিযুক্ত। এরপরই গ্রেফতারি এড়াতে মোবাইলের সুইচ-অফ করে দেয়।
জেরায় সাহিলের উদ্ধৃতি তুলে ধরে পুলিশের আরও দাবি, খুনে ব্যবহৃত ছুরিটি জঙ্গলে ফেলে দেওয়ার পর একটি রিক্সা করে সময়পুর যায়। সেখানকার একটি মেট্রো স্টেশনে রাত কাটায়। ঘটনার পরের দিন সকালে সময়পুর থেকে আনন্দ বিহারে গিয়েছিল বুলন্দশহরের বাস ধরার জন্য। গ্রেফতারের ভয়ে বুলন্দশহর যাওয়ার পথেও বেশ কয়েকবার অভিযুক্ত বাস বদল করে বলেও পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছে।
পুলিশের মতে, ঘটনার বেশ কয়েকদিন আগেই নাবালিকা প্রেমিকা সাক্ষীকে খুনের পরিকল্পনা নিয়েছিল সাহিল। খুনের ১৫ দিন আগে ছুরিটি হরিদ্বার থেকে কিনেছিল। তবে, এখনও পর্যন্ত খুনে ব্যবহৃত ছুরি ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা যায়নি। জেরায় সাহিল বারবার তার বয়ান পরিবর্তন করেছে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্ত জানিয়েছে, বেশ কয়েকদিন আগে সাক্ষীর সঙ্গে ঝাব্রু নামে এক যুবকের বন্ধুত্ব হয়েছিল। এরপর সাহিলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে নাবালিকার। এ নিয়ে ঝাব্রু এবং সাক্ষীর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। সেই আক্রোশ থেকে খুনের পরিকল্পনা সাহিল নিয়েছিল বলে পুলিশের অনুমান।

এদিকে, খুনের যে ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে রাজধানীর পুলিশ। ভিডিওতে সাহিলকে ছুরি নিয়ে হামলা করতে দেখা যায়। খুনের সময় আটজন প্রত্যক্ষদর্শীকে ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছিল। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান রেকর্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রসঙ্গত, রবিবার রোহিনীর শাহবাদ ডেয়ারি এলাকায় প্রকাশ্যে নাবালিকা প্রেমিকাকে খুনের ঘটনায় দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। সোমবারই উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহর থেকে অভিযুক্ত প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এরপর সাক্ষীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়ে। দিল্লির একটি আদালত অভিযুক্তের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সাহিলকে পুলিশ হেফাজতে পাঠায় আদালত।বৃহস্পতিবার ফের সাহিলকে আদালতে তোলা হলে আরও ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় বিচারক ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *