কলকাতা, ২৯ মে (হি. স.) : খাস কলকাতায় চুরি। তাও আবার স্বয়ং কলকাতা পৌরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের বালিগঞ্জ প্লেসের বাড়িতে। অভিযোগ, আলমারি ভেঙে ৫০ লাখ টাকা লুট করে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। উধাও হয়েছে লাখখানেক টাকার অলঙ্কার।
জানা গিয়েছে, দোতলার ফ্ল্যাট তালাবন্ধ অবস্থায় থাকার ফলে গত রাতে দুষ্কৃতীরা প্রথমে শৌচালয়ে প্রবেশ করে৷ এর পর শৌচালয়ের দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢুকে পড়ে। কাউন্সিলরের তরফে স্থানীয় গড়িয়াহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, চোরেরা ঘরে ঢোকার সময় বাড়ির সিসিটিভি ক্যামেরা প্রথমে ভেঙে দেয় ।বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে মঙ্গলবার সকালে। খাস কলকাতায় কাউন্সিলারের বাড়িতে চুরির ঘটনায় শহরের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
জানা গিয়েছে, তিনতলায় থাকেন কাউন্সিলার সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়৷ তাঁর দোতলার ফ্ল্যাট তালাবন্ধ অবস্থাতেই থাকে অধিকাংশ সময়। সকালে দোতলার শৌচালয় থেকে জল পড়ার শব্দ শুনতে পান কাউন্সিলর। এরপরই সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখতে পান দুটি ঘর একেবারে লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পড়ে রয়েছে । ঘরের আলমারি উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে এবং সেখান থেকে সোনা-দানা-সহ সমস্ত কিছু নিয়ে চম্পট দিয়েছে চোরের দল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে স্থানীয় থানার পুলিশ। পাশাপাশি আসেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরাও। চোরেরা কোন পথ দিয়ে ঢুকল এবং কোন রাস্তা দিয়ে পালাল তা জানার জন্য ইতিমধ্যেই রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘরের তালা ভাঙতে না পেরে প্রথমে শৌচালয়ের দরজায় কাচ ভেঙে ফেলে চোরেরা । এরপর দুটি ঘর কার্যত লণ্ডভণ্ড করে আলমারির তালা ভেঙে লুটপাট চালায় তারা ৷ আলমারি থেকে ৫০ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে দাবি কাউন্সিলরের। সম্প্রতি একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য লক্ষাধিক টাকার সোনার গয়না ওই আলমারিতে রেখেছিলেন কাউন্সিলার। তাঁর অভিযোগ, চোরেরা ওই সোনার গয়না এবং নগদ টাকা নিয়ে চম্পট দেয়। গোটা ঘটনার তদন্তে নামে স্থানীয় থানা এবং লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ।
এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ অনুমান করছে এই চুরির নেপথ্যে থাকতে পারে কোনও পরিচিতের হাত। এর কারণ কাউন্সিলারের দোতলার ঘরটি তালাবন্ধ অবস্থায় থাকে। সেই খবর চোরেরা কীভাবে টের পেল? এই প্রশ্ন দানা বেঁধেছে তদন্তকারীদের মনে৷ চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। প্রশ্ন উঠেছে, ফাঁকা ফ্ল্যাটের আলমারিতেই কেন এত টাকা রাখবেন কাউন্সিলার? এই টাকাটা তিনি পেলেন কীভাবে?