কালাইন (অসম), ১ মে (হি.স.) : পাঁচ বছরেও সম্পূর্ণ হয়নি কাছাড় জেলার অন্তৰ্গত কালাইনের লারাং সেতু। ফলে প্রশ্নের মুখে লোকনির্মাণ (পূর্ত) দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার সুষ্ঠু কর্ম-সংস্কৃতির ডাক।
রাজ্যে সুষ্ঠু কর্মসংস্কৃতি বজায় রাখতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী ড. শর্মা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর গৃহীত পদক্ষেপকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ প্রদর্শন করে উদাসীনতার চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তাঁরই তত্ত্বাবধানে পরিচালিত লোকনির্মাণ বিভাগ। এর জ্বলন্ত উদাহরণ কালাইনের লারাং সেতু। পূর্ত বিভাগের চরম উদাসীনতায় শিলান্যাসের পাঁচবছর দুমাস অতিক্রান্ত হলেও এই সেতুর নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হয়ে ওঠেনি।
কাটিগড়া বিধানসভা কেন্দ্রের কালাইন ব্লকের অন্তর্গত কালাইন গ্রাম পঞ্চায়েত (জিপি)-এর ছলিগ্রামে লারাং নদীর ওপর অ্যাপ্রোচ সহ ৫৮.০৪ মিটার দৈর্ঘ্যের আরসিসি সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পূর্ত শিলচর রুরাল রোড ডিভিশনের অধীনে ২ কোটি ৯৭ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছিল অসম সরকার। ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেতুর নির্মাণকাজের শিলান্যাস করা হয়। যৌথভাবে শিলান্যাস করেছিলেন কাটিগড়ার তৎকালীন বিধায়ক অমরচাঁদ জৈন এবং কাছাড়ের তৎকালীন জেলাশাসক এস লক্ষণন। শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বিভাগীয় তরফে উপস্থিত ছিলেন পূর্ত বিভাগের শিলচর রুরাল রোড ডিভিশনের তৎকালীন এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মৃন্ময় নাথ।
শিলান্যাসের পর অনুষ্ঠিত জনসভায় সহস্রাধিক জনতার সামনে বিধায়ক এবং জেলাশাসক সেতুর নির্মাণকাজ নির্দিষ্ট সময়সীমা, অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ করে চলাচলযোগ্য করে তুলতে বিভাগীয় এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার মৃন্ময় নাথ ও বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার দীপককুমার বুচাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু শিলান্যাসের পাঁচ বছর দুমাস পরও সেতুটির দুদিকের অ্যাপ্রোচ এখনও তৈরি হয়নি। যার ফলে সেতুটি আজ পর্যন্ত চলাচলযোগ্য হয়ে ওঠেনি।
এদিকে এক বছরের জায়গায় পাঁচ বছর পরও লারাং সেতুর নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ না হওয়ায় জনমনে তীব্র ক্ষোভের পাশাপাশি নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা পূর্তবিভাগের অধীনে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় কর্মসংস্কৃতি বজায় রেখে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও বরাক উপত্যকার ক্ষেত্রে হচ্ছে না কেন? কোন যাদুবলে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বরাক উপত্যকার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণ করছে পূর্ত বিভাগ?
ছলিগ্রাম এলাকার জনগণের বক্তব্য, কর্মচঞ্চল মুখ্যমন্ত্রীর হাতে রয়েছে পূর্তবিভাগ। তাই পূর্ত বিভাগের এমন উদাসীনতা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। কারণ পূর্তবিভাগের এ ধরনের উদাসীনতায় মুখ্যমন্ত্রীর কর্ম-সংস্কৃতির স্লোগানকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে। ছলিগ্রাম এলাকার জনগণ লারাং সেতুর নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ করে চলাচলযোগ্য করে তুলতে মুখ্যমন্ত্রীর আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন।