আগরতলা, ১৮ এপ্রিল (হি. স.) : সারা দেশের মতোই ত্রিপুরাতেও করোনার চোখ রাঙানি শুরু হয়েছে। গত কয়েকদিনে ত্রিপুরায় ১০ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন। স্টেট ডিসিজ সার্ভেইলেন্স অফিসার ডাঃ অন্তরা বণিক জানিয়েছেন, করোনার নয়া প্রজাতি মারণদায়ী নয়, তবে সংক্রমণ খুবই দ্রুত ছড়াতে সক্ষম। তাই, কোবিড বিধি মেনে চললেই ওই সংক্রমণের প্রকোপ থেকে বাঁচা সম্ভব হবে।
তিনি জানান, সম্প্রতি ঊনকোটি জেলায় ৫ জন, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় চারজন এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ১ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে একজনের মুম্বাই ভ্রমণের ইতিহাস রয়েছে। সাথে তিনি যোগ করেন, ত্রিপুরা সরকার ইতিমধ্যে নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত, ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রবেশ দ্বারে করোনার নমুনা পরীক্ষা বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকার সকলের কাছে কোভিড বিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে।
তাঁর কথায়, দেশে চিহ্নিত করোনার নয়া প্রজাতি খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম। তবে, স্বস্তির বিষয় ওই সংক্রমনে আক্রান্ত মৃত্যুর হার খুবই কম। তাই, সংক্রমণের গতি থামাতে হবে। এক্ষেত্রে, কোভিড বিধি মেনে চলা সবচেয়ে জরুরি, জোর দিয়ে বলেন তিনি। তাঁর মতে, মাস্ক পরিধান এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ফের শুরু করতে হবে। এ-বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা স্বাস্থ্য দফতর শীঘ্রই প্রকাশ করবে।
জেলা সার্ভেইলেন্স অফিসার শঙ্খ শুভ্র দেবনাথ জানিয়েছেন, পেচারথল হাসপাতালে দুইজনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। তাঁরা সর্দি-কাশির সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। গত ১৫ এপ্রিল তাঁদের করোনার নমুনা পরীক্ষার পর রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সাথে তিনি যোগ করেন, ওই দুই জনের পরিচিতদের সন্ধান করে করোনার নমুনা পরীক্ষায় একই পরিবারের তিনজনের দেহে সংক্রমণ মিলেছে। তাঁদের সকলের আরটি-পিসিআর নমুনা সংগ্রহ করে পুরো জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য যেই ভাইরাসে তাঁরা সংক্রামিত হয়েছে তা নির্ধারণের জন্য আগরতলা সরকারী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ত্রিপুরায় গত ২৪ ঘন্টায় ৬ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। তাতে, করোনা আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০। দৈনিক সংক্রমণের হার বর্তমানে হয়েছে ০.৯৪ শতাংশ। তবে, মৃত্যুর কোন খবর নেই। এদিকে, জেলাভিত্তিক দৈনিক সংক্রমনে পশ্চিম ত্রিপুরা ও ঊনকোটি ত্রিপুরা জেলা শীর্ষে রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের মিডিয়া বুলেটিন অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরটি-পিসিআরে ৮ জন এবং রেপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে ৬৩১ জন মোট ৬৩৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে, রেপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে ৬ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। ফলে, দৈনিক সংক্রমণের হার বর্তমানে হয়েছে ০.৯৪ শতাংশ। বর্তমানে ত্রিপুরায় করোনায় আক্রান্ত সক্রিয় রোগী রয়েছেন ১০ জন।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ১০৮০৪৪ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০৭০২৮ জন সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেয়ে সুস্থ হয়েছেন। রাজ্যে বর্তমানে করোনা-আক্রান্তের হার হয়েছে ৪.০৬ শতাংশ। তেমনি, সুস্থতার হার হয়েছে ৯৯.০৬ শতাংশ। এদিকে, ০.৮৭ শতাংশ হয়েছে মৃত্যুর হার। এছাড়া ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ৯৩৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য দফতরের মিডিয়া বুলেটিনে আরও জানা গিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে পশ্চিম জেলায় ৩ জন এবং ঊনকোটি জেলায় ৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বাকি ছয় জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ করোনা আক্রান্ত হননি।
2023-04-18

