কলকাতা, ৭ এপ্রিল (হি. স.) : কলকাতায় পার্কিং ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে ওই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের কথা বলেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকে একথা জানান তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
শুক্রবার সাংবাদিকের কুণাল বলেন, পুরসভা এলাকায় পার্কিংয়ের খরচ অনেকটা বেড়ে গেছে। সেটি আমাদের নেতৃত্বের নজরে এসেছে। সাধারণ মানুষকে অনেকটা টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে। বিষয়টা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ে কাছে পৌঁছেছে। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। এই সরকারের নীতি হচ্ছে সাধারণ মানুষের উপর চাপ না পড়ে। ২০১১ থেকে এমন কাজ করেননি তিনি যাতে চাপ তৈরি হয়। এই সিদ্ধান্ত আজকের মধ্যেই প্রত্যাহার করতে হবে পুরনিগমকে।
দিনকয়েক আগে ফিরহাদ হাকিম জানান, প্রতি একঘণ্টা পিছু দু’চাকা গাড়ি পার্কিং করতে লাগবে ১০ টাকা। চার চাকা গাড়ির পার্কিং ফি বেড়ে দাঁড়ায় ২০ টাকা। ৫ ঘণ্টার বেশি সময় গাড়ি রাখলে ঘণ্টাপিছু দিতে হবে ১০০ টাকা। বাস এবং লরি রাখার জন্য ঘণ্টাপিছু পার্কিং ফি ২০ টাকা থেকে বেড়ে হয় ৪০ টাকা। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রথম দু’ঘণ্টা ফি একই থাকবে। তবে দু’চাকা গাড়ি পার্কিং লটে ৩ ঘণ্টা থাকলেই ফি ৪০ টাকা। ৪ ঘণ্টার জন্য ৬০ টাকা এবং ৫ ঘণ্টার জন্য ৮০ টাকা। মোটরবাইক রাখার সময়সীমা ৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেই ঘণ্টা পিছু পার্কিং ফি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ টাকা। চারচাকা গাড়ির ক্ষেত্রে ২ ঘণ্টার জন্য ৪০, ৩ ঘণ্টার জন্য ৮০, ৪ ঘণ্টার জন্য ১২০ এবং ৫ ঘণ্টার জন্য ১৬০ টাকা পার্কিং ফি।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ জানান, মুখ্যমন্ত্রীকে না জানিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। পার্কিং ফি বৃদ্ধি নিয়ে ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কথা বলেন। তারপরই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারে নির্দেশ দেন মমতা।
কুণাল বলেন, “আমাদের নেতৃত্বের নজরে এসেছে। পুরসভা এলাকায় পার্কিংয়ের খরচ অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষকে অনেকটা টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে। এই সরকারের উদ্দেশ্য যাতে সাধারণ মানুষের উপর চাপ না পড়ে। ২০১১ থেকে এমন কাজ করেননি তিনি যাতে চাপ তৈরি হয়। তবে এই সিদ্ধান্তে মানুষ বিস্মিত। বিষয়টা নিয়ে কথা বলেন অভিষেক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট সিদ্ধান্ত তাঁর অনুমোদন সাপেক্ষে এটা হয়নি। যে স্তরেই হোক সরকার বা দল এটা অনুমোদন করে না। তিনি চান না কোনও চাপ পড়ুক। তিনি মেয়রকে জানিয়ে দিয়েছেন যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হোক।”
সম্প্রতি ফিরহাদকে নানা ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। “কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে”, কবিতার লাইন উদ্ধৃত করেও মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে। তারপরই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশকে অবশ্য সামান্য বিষয় বলে দেখছে নারাজ বিরোধীরা। দলের সঙ্গে তবে কি দূরত্ব তৈরি হচ্ছে ফিরহাদের, জল্পনা তুঙ্গে।