মণিপুরের জিরিবাম-ইমফল নতুন রেলওয়ে প্রকল্পের ৯৩ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ

গুয়াহাটি, ২ এপ্রিল (হি.স.) : ভারতীয় রেলওয়ে একাধিক নতুন রেলওয়ে লাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করার মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। রাজধানী সংযোগী প্রকল্পের অধীনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবগুলি রাজ্যের রাজধানীকে সংযুক্ত করতে নতুন রেলওয়ে লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। জিরিবাম-ইমফল নতুন রেলওয়ে লাইন প্রকল্প হলো উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প, যা প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পর্যায়ে। দেশের অবশিষ্ট অংশের সাথে মণিপুরের রাজধানী শহর ইমফলকে সংযুক্ত করার জন্য এই নতুন রেলওয়ে লাইন প্রকল্পের কাজ অন্যান্য সংযোগী প্রকল্পের পাশাপাশি জোরকদমে এগিয়ে চলেছে। জিরিবাম-ইমফল প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে ৯৩.৩০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে।

উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে জানান, জিরিবাম-ইমফল রেলওয়ে লাইন নির্মাণ প্রকল্পে কঠিন ভূখণ্ডের মধ্যে একাধিক সুড়ঙ্গ ও সেতু অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা ১১১ কিলোমিটারেরও অধিক দৈর্ঘ্যে প্রসারিত। এই প্রকল্পে সুড়ঙ্গের মোট দৈর্ঘ্য ৬১.৩২ কিমি, যার মধ্যে ৫৯.১১ কিমি সুড়ঙ্গের কাজ ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে। এই প্রকল্পে মোট ১১টি মেজর ব্রিজ এবং ১৩৭টি মাইনোর ব্রিজ আছে, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত পাঁটি মেজর ব্রিজ ও ১০১টি মাইনোর ব্রিজের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ১৪১ মিটার উচ্চতার পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু স্তম্ভের রেলওয়ে ব্রিজ এই প্রকল্পে নির্মাণ করা হয়েছে এবং সেটি সম্পূর্ণ হওয়ার পথে।

ট্রেন পরিষেবার জন্য জিরিবাম থেকে খংসং পর্যন্ত সেকশন ইতিমধ্যে চালু হয়ে গেছে। স্থলপথ দিয়ে জিরিবাম থেকে ইমফল যাওয়ার জন্য বর্তমানে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন। সমগ্র প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হওয়ার পর রেলওয়ের মাধ্যমে এই দূরত্ব ২.৫ ঘণ্টায় হ্রাস পাবে। প্রচণ্ড বৃষ্টিপাত ও অন্যান্য লজিস্টিক বাধার মতো সমস্ত প্রত্যাহ্বানের মোকাবিলা করে এই প্রকল্প সম্পূর্ণ করার জন্য উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে নিজেদের সম্পূর্ণ প্রচেষ্টা কাজে লাগিয়ে দিনরাত চব্বিশ ঘণ্টা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি জানান, এই নতুন রেল প্রকল্পটি মণিপুরের জনগণকে উন্নত সংযোগ প্রদান করবে। এই অঞ্চলে ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগ বিকাশে সহায়ক হবে এবং রাজ্যের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। এছাড়া এই রেল লাইনের মাধ্যমে রাজ্য দ্রুতগতিতে অত্যাবশ্যক সামগ্রী গ্রহণ করতে পারবে এবং স্থানীয় উৎপাদনকারীরা নিজেদের উৎপাদিত সামগ্রী রাজ্যের বাইরে দ্রুতগতিতে নিয়ে যেতে পারবেন। রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতিও ঘটবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *