ত্রিপুরায় জিরো মাইল হিসেবে পরিচিত স্থানটিকে মহারাজা বীর বিক্রম চৌমুহনী নামে নামাঙ্কিত করেন মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৩১ মার্চ (হি. স.) : ত্রিপুরায় জিরো মাইল হিসেবে পরিচিত স্থানটিকে মহারাজা বীর বিক্রম চৌমুহনী নামে নামাঙ্কিত করেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক(ডা:) মানিক সাহা। এছাড়া তিনি আরও দুইটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। আজ আগরতলার মহারাজগঞ্জ বাজার সংলগ্ন গ্র্যান্ডিউস চৌমুহনীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আগরতলা স্মার্টসিটি এবং আগরতলা পুরনিগমের অন্তর্গত তিনটি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। উন্নয়ন কাজের মধ্য দিয়েই সরকার মানুষের হ্রদয় স্পর্শ করতে চায়।  এদিন মুখ্যমন্ত্রী আগরতলার কামান চৌমুহনী সংলগ্ন সরলা মোড়কে মহারাজা বীর বিক্রম চৌমুহনী নামে নামাঙ্কিত, উমাকান্ত একাডেমি, নন্দননগর ও আইজিএম হাসপাতালের সামনে থিমেটিক বাস শেলটার এবং মহারাজগঞ্জ বাজারে ফ্লাড ড্রেনেজ পাম্প হাউজ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন।


তাঁর কথায়, বর্তমান ত্রিপুরা সরকার জাতি জনজাতি সকল অংশের মানুষকে সাথে নিয়ে রাজ্যকে অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময়েই জনজাতিদের সম্মান প্রদর্শন করে থাকেন। সেই লক্ষ্যে আজ কামান চৌমুহনী সংলগ্ন আইল্যান্ডটির নাম মহারাজা বীর বিক্রম চৌমুহনী নামে নতুন নামাকরণ করা হয়েছে। এই আইল্যান্ডেই আধুনিক ত্রিপুরার রূপকার মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্যের আবক্ষ মূর্তির আবরণ উন্মোচন করা হয়েছে। এরফলে এই জায়গটিতে সুন্দর একটি পরিবেশ গড়ে উঠেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ত্রিপুরা সরকার প্রধানমন্ত্রীর নীতি ও আদর্শকে পাথেয় করে রাজ্যের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞকে অব্যাহত রাখতে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। রাজ্যে সরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হাব গড়ে তুলতে চাইছে। পাশাপাশি সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও তাদের আর্থসামাজিক মান উন্নয়নেও উদ্যোগ নিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জি-২০ গোষ্ঠিভুক্ত দেশগুলির প্রতিনিধিগণ বৈঠক করতে ত্রিপুরায় আসছেন। ত্রিপুরার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে বিদেশের প্রতিনিধিদের সামনে তুলে ধরা হবে যাতে তারা ত্রিপুরা সম্পর্কে আরও আকৃষ্ট হন। তিনি বলেন, ত্রিপুরার ভবিষ্যত অত্যন্ত উজ্জ্বল। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাতেই আগামী দিনে দেশে ত্রিপুরা একটি উন্নত রাজ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
অনুষ্ঠানে আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার বলেন, বর্তমান ত্রিপুরা সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আগরতলা স্মার্ট সিটি প্রকল্পে আগরতলা শহরকে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা ও সমস্যা নিরসনে সরকার কাজ করছে। শহরবাসীকে সুস্থ নাগরিক পরিসেবা প্রদান, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়ন সহ রাস্তা, ড্রেইন সংস্কার করে শহরকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আগরতলা শহরে বিভিন্ন অব্যবহারযোগ্য পুকুরগুলির সংস্কার করে ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হচ্ছে। আগরতলা শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, যানজটমুক্ত এবং শহরবাসীকে বৃষ্টির জমে থাকা জল থেকে পরিত্রাণ দিতে আগরতলা পুরনিগম সচেষ্ট। এক্ষেত্রে তিনি শহরবাসীর সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
অনুষ্ঠানে আগরতলা স্মার্টসিটি লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিব অফিসার ডঃ শৈলেশ কুমার যাদব আগরতলা পুরনিগম এবং আগরতলা স্মার্টসিটির অন্তর্গত যে প্রকল্পগুলির আজ উদ্বোধন হয়েছে সেগুলির বিবরণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এমবিবি চৌমুহনীর নতুন নামাকরণ প্রকল্প রূপায়নে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। স্মার্টসিটি মিশনে উমাকান্ত একাডেমি, নন্দননগর এবং আইজিএম হাসপাতালের সামনে নির্মিত যাত্রী শেডগুলির জন্য মোট ব্যয় হয়েছে ৯০ লক্ষ টাকা। ১ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকায় জল নিষ্কাশনের জন্য মহারাজগঞ্জ বাজারে ফ্লাড ড্রেইনেজ পাম্প হাউজ বসানো হয়েছে। তিনি বলেন আগরতলা শহরে ১৬টি পাম্প ছিল এটি ১৭তম। তিনি জানান, আগরতলা পুরনিগম এবং স্মার্টসিটি মিশনের অন্তর্গত বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়নে ত্রিপুরা সারা দেশে প্রশংসিত হয়েছে।