কলকাতা, ২৭ মার্চ (হি.স.) : “বাংলা শুনলেই মনে হয় আমি গ্রামের আশেপাশেই আছি”। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিক সংবর্ধনায় নিজের ভাষণে একথা বলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু । তাঁর মুখে শোনা গেল বাংলার মনীষীদের কথা । এদিনের ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন রাষ্ট্রপতি ।
দু’দিনের পশ্চিমবঙ্গ সফরে কলকাতায় এলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সোমবার সন্ধ্যায় নেতাজি ইন্ডোরে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিক সংবর্ধনা রাষ্ট্রপতি মুর্মুর হাতে দুর্গামূর্তি তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে একে একে স্মারক তুলে দেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা।এরপর নিজের ভাষণ দিতে ওঠেন রাষ্ট্রপতি . মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তৃতা শুরু করেন রাষ্ট্রপতি। বাংলায় বললেন, ‘‘বাংলার ভাইবোনদের শুভেচ্ছা। জয় জহর।’’ জানালেন বেলুড় মঠে যাওয়ার জন্য তিনি উদগ্রীব। তুলে ধরলেন বাংলার সংস্কৃতির কথা।
এদিন তাঁর মুখে শোনা গেল বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম । বললেন, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু এবং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থানে গিয়ে ভাগ্যবতী বলে মনে করেন। তুলে ধরলেন ক্ষুদিরাম বসুর কথা। শহিদ ক্ষুদিরাম, বিনয়-বাদল-দীনেশকে শ্রদ্ধা জানান তিনি। বলেন, ‘‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি।’’
‘‘বাংলা ভাষা আমার খুব মিষ্টি লাগে। যখন এই ভাষা শুনি মনে হয় গ্রামের আশেপাশেই আছি। এমনই এই ভাষার সুবাস।’’ বললেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। নাম নিলেন সত্যজিৎ রায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। বলেন, ‘‘আত্মসম্মান তথা আত্মগৌরবের জন্য বাংলার পরিচয় রয়েছে। কেবল ১৮ বছর বয়সে ভারতমাতার জন্য ফাঁসিতে চড়েছেন ক্ষুদিরাম বসু। ‘‘এক বার বিদায় দে মা, ঘুরে আসি’’— গানটি এখনও বাংলার সব কচিকাচারা গায়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলা ভাষা আমার ভীষণ মিষ্টি লাগে। সুইট ল্যাঙ্গুয়েজ। এই ভাষা যখনই আমার কানে আসে আমার মনে হয়, নিজের গ্রাম-জেলার আশেপাশেই আছি। এমনই এই ভাষার সৌন্দর্য, এমনই এর সুবাস।’’
মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুবলেন, ধন্যবাদ অনেক ছোট শব্দ। ‘‘সবাইকে সমান ভাবা, সবাইকে সম্মান দেওয়া, সবাইকে আপন করার গুণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আজ অভিভূত।’’
মুখ্যমন্ত্রীর নাচে মুগ্ধ হয়ে এদিন রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘‘আমি আজ ভীষণ খুশি। মুখ্যমন্ত্রী যখন আদিবাসী শিল্পীদের সঙ্গে নিজেই বাদ্যযন্ত্র বাজালেন, নাচলেন তালে তালে, আমার ভীষণ ভাল লাগল। এটা সবাইকে সমান ভাববার একটি চিহ্ন। সবাইকে সম্মান দেওয়া। সবাইকে সমান ভাবে কাছে টেনে নেওয়া, সব সংস্কৃতিকে সম্মান দেওয়া— এটা বড় কলা। এটা মুখ্যমন্ত্রীর আছে। এ জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।’’

