নকশালবাড়িতে বাতারিয়া নদীর কৃষিবাঁধ সংস্কার চেয়ে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীকে

নকশালবাড়ি, ২০ মার্চ (হি. স.) : শিলিগুড়ির বাতারিয়া নদীর কৃষিবাঁধ সংস্কারের জন্য শেষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হলেন নকশালবাড়ি এবং মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষকরা। বাতারিয়া নদীর বাঁধগুলি দ্রুত সংস্কারের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে নবান্নতে চিঠি দিলেন কৃষকরা। চিঠিতে এলাকার ৭০ জন কৃষকের স্বাক্ষর, মণিরাম ও নকশালবাড়ি এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যদের স্বাক্ষর এবং নকশালবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের স্বাক্ষর রয়েছে। ডাকযোগে ওই চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি ই-মেল করেন কৃষকরা।

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোটের আগে নকশালবাড়ি ব্লকে বাতারিয়া নদীর কৃষিবাঁধগুলি সংস্কারের দাবি তুলেছিলেন এলাকার কৃষকরা। কিন্তু ভোট পেরিয়ে গেলেও কেউই কৃষিবাঁধগুলি সংস্কারের দিকে নজর দেয়নি। ইদানীং নকশালবাড়ি ও মণিরাম গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু কৃষক জলের অভাবে চাষবাস করতে পারছেন না। তিন ফসলি জমিগুলি এক ফসলি জমিতে পরিণত হয়েছে। এবারেও অনেক কৃষক বোরো ধানের জন্য জমিতে বীজ বুনেছেন। কিন্তু জলের অভাবে সেচের সমস্যা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন কৃষকরা।

অভিযোগ, বাম আমলে তৈরি বাতারিয়া নদীর কৃষিবাঁধগুলি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বেশিরভাগ বাঁধের লকগেট ভেঙেছে, কোথাও কচুরিপানায় ঢেকে গিয়েছে বাঁধের সেচনালাগুলি, আবার কোথাও ক্যানেলের স্লুইসগেট বিকল হয়ে পড়ে আছে দীর্ঘদিন যাবৎ। নকশালবাড়ি ব্লকের অন্তর্গত মণিরাম এবং নকশালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে অবস্থিত বাতারিয়া নদীতে চারটি বাঁধ রয়েছে। এই চারটি বাঁধ থেকে এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদ হয়। এর মধ্যে কিলারামজোতের বাঁধ, কোটিয়া জোতের বাঁধ, জয়শিংজোতের বাঁধ এবং রঘুজোতের পাহাড়িয়া বাঁধের গুরুত্ব অপরিসীম।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, কোটিয়াজোত এবং রঘুজোতের পাহাড়িয়া বাঁধ ১৯৯৪ সালে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সেচ দপ্তর থেকে তৈরি করা হয়েছিল। যার বর্তমান অবস্থা বাঁধে লোহার গেট বলতে কিছুই নেই। বাঁধের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা সেচনালাগুলি দখলে এবং জঙ্গলে বন্ধ হতে চলেছে। অন্যদিকে জয়শিংজোতের বাঁধটিতে মাটির বস্তা দিয়ে কোনওরকমভাবে জল তুলছেন কৃষকরা। নদীর বাঁধগুলিকে নিয়ে প্রশাসনের উদাসীন মনোভাবে ক্ষোভে ফুঁসছেন কৃষকরা।
একতা কৃষক সমাজ সংঘের সভাপতি মনোরঞ্জন সিংহ জানান, বাতারিয়া নদীর বাঁধের মেরামতের জন্য বহুবার বিধায়ক, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ, বিডিওকে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু কেউই সমস্যার সমাধানে নজর দেয়নি। জলের অভাবে কৃষিকাজ করতে পারছেন না কৃষকরা। শেষ ভরসা মুখ্যমন্ত্রী।