ত্রিপুরায় ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে ২৭ ফেব্রুয়ারি ভোট, গণনা ২ মার্চ, নির্বাচন কমিশনের নির্ঘন্ট ঘোষণা

আগরতলা, ১৮ জানুয়ারি(হি. স.) : উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তিন রাজ্য ত্রিপুরা, মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডে নির্বাচনের নির্ঘন্ট ঘোষণা দিয়েছে কমিশন। আজ নয়াদিল্লিতে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের ঘোষণা, ত্রিপুরায় ১৬ ফেব্রুয়ারি এবং মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে ২৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিন রাজ্যেই ভোটের ফলাফল ২ মার্চ প্রকাশিত হবে। আজ থেকেই ওই তিন রাজ্যে আদর্শ আচরণ বিধি লাগু হয়ে গেছে। ২১ জানুয়ারি ত্রিপুরায় এবং ৩১ জানুয়ারি মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে, সাথে যোগ করেন তিনি।

এদিন তিনি বলেন, ৬০ আসন বিশিষ্ট ত্রিপুরায় ৩০ জানুয়ারি মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার অন্তিম তারিখ স্থির করা হয়েছে। ৩১ জানুয়ারি মনোনয়ন পত্র পরীক্ষা করে দেখা হবে। ২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের অন্তিম তারিখ ধার্য হয়েছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন এবং ২ মার্চ ফলাফল ঘোষণা দেওয়া হবে, জানিয়েছেন তিনি।

সাথে তিনি যোগ করেন, ৬০ আসন বিশিষ্ট মেঘালয় এবং নাগাল্যান্ডে মনোনয়ন পত্র জমা নেওয়ার অন্তিম তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি স্থির করেছে নির্বাচন কমিশন। ৮ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন পত্র পরীক্ষা করা হবে। ১০ ফেব্রুয়ারি মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের অন্তিম তারিখ ধার্য করা হয়েছে। নির্বাচন ২৭ ফেব্রুয়ারি এবং ফলাফল ২ মার্চ ঘোষণা দেওয়া হবে, বলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ত্রিপুরায় ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ২২ মার্চ পর্যন্ত বর্তমান বিধানসভার মেয়াদ রয়েছে। তেমনি, মেঘালয়ে ২০১৮ সালের ১৬ মার্চ থেকে ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত বিধানসভার মেয়াদ রয়েছে। এছাড়া, নাগাল্যান্ডে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ থেকে ২০২৩ ১২ মার্চ পর্যন্ত বিধানসভার মেয়াদ রয়েছে।

এদিকে, ত্রিপুরায় ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১০টি তপশীলি জাতী এবং ২০টি তপশীলি জনজাতি সংরক্ষিত আসন রয়েছে। সাধারণ আসনের সংখ্যা ৩০টি। তেমনি, মেঘালয়ে ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে তপশীলি জনজাতি সংরক্ষিত আসন রয়েছে ৫৫টি এবং সাধারণ আসনের সংখ্যা ৫টি। অন্যদিকে, নাগাল্যান্ডে ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে তপশীলি জনজাতি সংরক্ষিত আসনের সংখ্যা ৫৯টি এবং সাধারণ আসন রয়েছে ১টি।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ত্রিপুরায় মোট ২৮ লক্ষ ১৩ হাজার ৪৭৮ জন ভোটার রয়েছেন। তাঁদের সার্ভিস ভোটার রয়েছেন ১০৩৪৪ জন। তেমনি, মেঘালয়ে মোট ২১ লক্ষ ৬১ হাজার ১২৯ জন ভোটার রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সার্ভিস ভোটারের সংখ্যা ৩৮৪৪ জন। অন্যদিকে, নাগাল্যান্ডে মোট ভোটার রয়েছেন ১৩ লক্ষ ৯ হাজার ৬৫১ জন। তাঁদের মধ্যে সার্ভিস ভোটারের সংখ্যা ৭৯৮৩ জন।

মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দাবি, এবার ত্রিপুরায় নতুন ভোটারের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৪৪ জন। অন্যদিকে মেঘালয়ে ২৮ হাজার ১১৭ এবং নাগাল্যান্ডে ২৪ হাজার ৬৮৯ জন নতুন ভোটার রয়েছেন। এদিকে, ত্রিপুরায় ১৭২৯৭ জন, মেঘালয়ে ৭৪৭৮ জন এবং নাগাল্যান্ডে ৬৯৭০ জন দিব্যাঙ্গন ভোটার রয়েছেন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ত্রিপুরায় ৭৭ জন এবং মেঘালয়ে ২ জন রয়েছেন। নাগাল্যান্ডে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার নেই। এদিকে, ৮০ বছরের উর্দ্ধে ভোটার ত্রিপুরায় ৩৮০৩৯ জন, মেঘালয়ে ২২৬৬৩ জন এবং নাগাল্যান্ডে ৩৬৪০৩ জন।

এদিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জানিয়েছেন, ত্রিপুরায় ২০১৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ৩২১৪টি ভোট কেন্দ্র ছিল। যা ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে বেড়ে হয়েছে ৩৩২৮টি ভোট কেন্দ্র। শতাংশের হিসেবে ৩.৫৪% বৃদ্ধি হয়েছে। এদিকে, মেঘালয়ে ২০১৮ সালে ভোটকেন্দ্র ছিল ৩০৮৩টি। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে বেড়ে হয়েছে ৩৪৮২টি ভোট কেন্দ্র। শতাংশের হিসেবে ১২.৯৪% বৃদ্ধি হয়েছে। অন্যদিকে, নাগাল্যান্ডে ২০১৮ সালে ২১৯৪টি ভোট কেন্দ্র ছিল। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে বেড়ে হয়েছে ২৩১৫টি ভোট কেন্দ্র। শতাংশের হিসেবে ৫.৫১% বৃদ্ধি হয়েছে।

এদিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, ভোটের নিরাপত্তার দায়িত্বে কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকবে। তাছাড়া, নির্বাচনী আধিকারিকগণ কমিশনের নির্দেশিকা মেনে কাজ করবেন। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করতে কমিশনের তরফে সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে। ভোটারদের মনোবল বৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যে নির্বাচনী রাজ্যে ফ্ল্যাগ মার্চ শুরু করেছে। তিনি আশ্বস্ত করেন, মানুষের ভোটাধিকার সুনিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন কঠোর পদক্ষেপ নেবে। নির্বাচনে কমিশনের নির্দেশিকা উল্লঙ্ঘন হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।