কলকাতা, ১৭ জানুয়ারি (হি.স.): বর্তমানে সমগ্র দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ এবং সুবিধাজনক রাজ্য হয়ে উঠেছে উত্তর প্রদেশ। উত্তর প্রদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে একথা বলেছেন সে রাজ্যের শিল্পোন্নয়ন মন্ত্রী নন্দ গোপাল গুপ্তা নন্দী। উত্তর প্রদেশ ব্যবসায়িক শিখর সম্মেলন-২০২৩- বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানিয়ে মন্ত্রী নন্দ গোপাল গুপ্তা নন্দী বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা এতটাই ভালো যে সেখানে শিল্পপতিদের নিরাপত্তা ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। শিল্প সংস্থাগুলিকে এগিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়ে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, যোগী সরকার সমস্ত সমস্যা দূর করবে।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের একটি ভিডিও বার্তা দেখানো হয়। এই সম্মেলনে বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারের পরিচালিত শিল্পোন্নয়নের প্রকল্প নিয়ে একটি উপস্থাপনাও করা হয়। মঙ্গলবার কলকাতার একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী নন্দ গোপাল গুপ্তা নন্দী বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে এ দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে, ভারত বিশ্বগুরু হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের দায়িত্ব নরেন্দ্র মোদীর হাতে, আর উত্তর প্রদেশের দায়িত্ব মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের হাতে। বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল যাতে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছয় তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার ক্রমাগত কাজ করেছে। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে উত্তর প্রদেশ শিল্পের জন্য সেরা স্থান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ২০১৭ সালের আগে উত্তর প্রদেশ বিমারু রাজ্য হিসাবে পরিচিত ছিল, কিন্তু ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে উত্তর প্রদেশ হয়ে উঠেছে উত্তম প্রদেশ এবং এখন সেরা রাজ্য হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন সরকারে আসি, তখন উত্তর প্রদেশে মাত্র দু’টি বিমানবন্দর চালু ছিল, বর্তমানে রাজ্যে ৯টি বিমানবন্দর চালু রয়েছে। আগে মাত্র ২৪টি জায়গা থেকে বিমান ওঠানামা করত এবং বর্তমানে ৯০টিরও বেশি জায়গায় পরিচালিত হচ্ছে। আগামী সময়ে ১৯টি বিমানবন্দর থাকবে যার মধ্যে পাঁচটি আন্তর্জাতিক এবং বাকিগুলি অভ্যন্তরীণ হবে। জেওয়ার বিমানবন্দর শুধমাত্র নির্বাচনী ঘোষণা হিসেবে রয়ে গিয়েছিল, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বর্তমানে সেই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ব্যবসা সহজ করার জন্য আমাদের সরকারের প্রতিশ্রুতি এখানকার অনেক শিল্পপতিকে অনুপ্রাণিত করেছে। করোনার সময় ড্রোন দিয়ে সার্ভে করে মাত্র ১৪ মাসে উত্তর প্রদেশের বৃহত্তম ডেটা সেন্টার তৈরি করা হয়েছিল, যা ভারতের ইতিহাসে প্রথমবার। এটি শিল্পের প্রতি উত্তর প্রদেশের প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করে। বর্তমানে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে আইন-শৃঙ্খলা শুধু উত্তর প্রদেশ নয়, সারা দেশের জন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে। নন্দী বলেছেন, উত্তর প্রদেশে ৩৭.৭ শতাংশ এক্সপ্রেসওয়ে রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ১৭ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের লক্ষ্য পূরণ করা। শীঘ্রই আমাদের উত্তর প্রদেশের জিডিপি এক ট্রিলিয়ন করতে হবে। বাংলার বিনিয়োগকারীরা এতে অনেক সাহায্য করতে পারেন। উত্তর প্রদেশের দায়িত্ব হবে এখান থেকে বিনিয়োগকারীদের প্রতিটি অর্থ নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখা।
উত্তর প্রদেশের শ্রমমন্ত্রী অনিল রাজভর বলেছেন, বর্তমানে বিনিয়োগের জন্য উত্তর প্রদেশে মতো ভালো পরিবেশ বিশ্বের আর কোথাও নেই। বিশ্বের ১৬টি দেশ সারা দেশে বিনিয়োগ প্রচারের জন্য প্রোগ্রাম করছে। অনিল বলেছেন, রাজ্যের শ্রম মন্ত্রকের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ শ্রম আইনকে সরল করতে এবং শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলি দূর করতে বলেছিলেন। আমরা এটা শেষ করেছি। বর্তমানে কেউ উত্তর প্রদেশে শিল্পপতি বা ব্যবসায়ীদের কষ্ট দিতে পারবে না। কেউ এমনটা করলে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করেছি। বিশেষ করে বুন্দেলখণ্ড করিডোর উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এই করিডোরটি আগামী সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় হতে চলেছে, কারণ প্রতিরক্ষা করিডোর তৈরি করা হয়েছে এবং উত্তর প্রদেশ সরকার এখানে বিনিয়োগের জন্য সমস্ত ধরণের সহায়তা দেবে। তিনি বলেন, সরকার আপনাদের সাহায্য করতে প্রতিটি পদক্ষেপে আপনাদের পাশে আছে। রাজ্য শিল্প দফতরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ময়ুর মহেশ্বরী, প্রধান সচিব মুকেশ কুমার মেশরাম, কৃষি পণ্য কমিশনার এবং ইউপি সরকারের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব মনোজ কুমার সিং, বারজার পেইন্টের এমডি এবং সিইও অভিজিৎ রায়ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী দয়াশঙ্কর সিং এবং অজিত সিং পালও। উল্লেখ্য, বিভিন্ন মেট্রো শহরে দেশীয় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে দেখা করার আগে টিম যোগী বিশ্বের ১৬টি দেশের ২১টি শহরে রোড শো এবং বি২জি মিটিং পরিচালনা করে ৭.১২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ পেয়েছে।

