কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে ত্রিপুরায় যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১১ জানুয়ারি (হি. স.) : কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই ত্রিপুরার যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ত্রিপুরাকে হীরা মডেলে পরিণত করার যে আহ্বান রেখেছিলেন তার বাস্তবায়নও সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ত্রিপুরা সরকার জলপথের উন্নয়নেও পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ ও জলপথ মন্ত্রকও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আজ প্রজ্ঞাভবনে ‘স্কুল অব লজিস্টিক, কমিউনিকেশন এন্ড ওয়াটারওয়েজ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন।

এই ‘স্কুল অব লজিস্টিক, কমিউনিকেশন এন্ড ওয়াটারওয়েজ প্রতিষ্ঠানটির ভার্চুয়লী উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ, জলপথ এবং আয়ুষ মন্ত্রকের মন্ত্রী সর্বানন্দ সানোয়াল। প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি চালু হওয়ার ফলে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোগীরাও লাভবান হবেন। আগামী দিনে এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রাজ্যের ব্যবসায়ীদের মত বিনিময়েরও সুযোগ ঘটবে।
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, যে কোনও রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে রাজ্যে সড়ক, বিমান ও রেল যোগাযোগের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে রাজ্যে বর্তমানে ৬টি জাতীয় সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া আরও ৭টি জাতীয় সড়ক এবং ৪টি রোপওয়ে নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। পাশাপাশি ধর্মনগর-আগরতলা জাতীয় সড়ককে চার লেন করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ১০ হাজার ২২২ কোটি টাকার মঞ্জুরী দিয়েছে।

তিনি বলেন, ত্রিপুরায় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে বর্তমানে আগরতলা থেকে ১১টি এক্সপ্রেস ট্রেন দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে চলাচল করছে। শুধু তাই নয় আগরতলা রেল স্টেশনটিকে দেশের অন্যতম আধুনিক রেলস্টেশনে পরিণত করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার ত্রিপুরায় জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের উপর গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ জলপথের উন্নয়ন হলে পণ্য রপ্তানি-আমদানীর ক্ষেত্রে খরচ যেমন কম হবে তেমনি সময়েরও সাশ্রয় হবে। বাংলাদেশের সাথে জলপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা শুরু হলে ত্রিপুরা দক্ষিণ-এশিয়ার প্রবেশদ্বারে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে রাজ্য সরকার সেই দিশায় কাজ করছে।
তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যকে নিয়ে অষ্টলক্ষী গড়ার কথা বলেছেন। আর এই অষ্টলক্ষীর সার্বিক উন্নয়ন হলে দেশের উন্নয়নেরও গতি পাবে বলে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন। প্রধানমন্ত্রীর এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

এদিন পরিবহন দপ্তরের সবিব উত্তম কুমার চাকমা বলেন, অরুন্ধতীনগরস্থিত সিপার্ডে ৫ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ‘স্কুল অব লজিস্টিক, কমিউনিকেশন এন্ড ওয়াটারওয়েজ’ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান গঠনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধিতে অধ্যয়ন, গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও নানা শাখার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের কর্মশালার আয়োজন করা। তাতে ব্যবসায়ী, স্থানীয় উদ্যোগী, পর্যটন পরিচালকরা উপকৃত হবেন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *