নন্দীগ্রামে শহিদ স্মরণে বামেদের প্রশংসায় শুভেন্দু অধিকারী

হলদিয়া, ৭ জানুয়ারি (হি.স.) : নন্দীগ্রাম দিবসে নন্দীগ্রামে শহিদ স্মরণে বামেদের প্রশংসা করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার নন্দীগ্রামে শহিদ বেদিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, তৃণমূলের চেয়ে অনেক শক্তিশালী ছিল বামফ্রন্ট। সিপিএমের সবাই খারাপ নন, আমাদের সঙ্গে অনেক সিপিএম কর্মী এসেছেন। নন্দীগ্রামে একটা বড় অংশ যাঁরা হিন্দু, তাঁরা ভোট দিয়েছেন বলে আমি জিতেছি।

শনিবার নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুর আক্রমণ, ‘‘উনি দিদি থেকে দিদিমা হয়ে যেতেন, যদি না নন্দীগ্রাম থাকত।’’ তাঁর পরে তাঁর সংযুক্তি, ‘‘এদের থেকে (পড়ুন তৃণমূল) অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল সিপিএম। অনেক বেশি ক্ষমতা ছিল বামফ্রন্ট সরকারের। বামপন্থীরা সবাই খারাপ নন। আমাদের সঙ্গে প্রচুর বামপন্থী এসেছেন। নন্দীগ্রামে একটা বড় অংশ যাঁরা হিন্দু, তাঁরা ভোট দিয়েছেন বলে আমি জিতেছি। আমি তা অকপটে স্বীকার করি।’’

উল্লেখ্য, দীর্ঘ সময় নন্দীগ্রামে শক্ত ঘাঁটি ছিল বামেদের। তবে সিপিএম নয়, এখানে টানা জয়ী হয়েছেন সিপিআই প্রার্থী। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বনাম শুভেন্দু অধিকারীর দ্বৈরথে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী করেছিল সিপিএমের নবীন মুখ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে। বাম-কংগ্রেস জোট ভোট পেয়েছিলেন সামান্যই। ২ হাজারের কম ভোটে মমতাকে পরাজিত করেন শুভেন্দু। যদিও ওই ভোটের গণনাপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতে যায় তৃণমূল। সেই মামলা এখনও চলছে। তবে অনেকে মনে করেন, এই অল্প ব্যবধানে শুভেন্দুকে জিততে অনেকাংশে সাহায্য করেছে ‘বাম-ভোট’। নন্দীগ্রামে ভোট প্রচারের সময়ও শুভেন্দু বামপন্থীদের আবেদন করেছেন বিজেপিকে ভোট দিতে। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, তৃণমূল জয়লাভ করলে কোনও বিরোধী শক্তিকেই মাথা তুলে দাঁড়াতে দেবে না। তাই গণতন্ত্রের স্বার্থে ‘শক্তিশালী’ বিজেপিকে ভোট দিন বামপন্থীরা। শনিবার শহিদ দিবস নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির দড়ি টানাটানিতে বামেদের ‘ধন্যবাদ’ জানালেন বিজেপি বিধায়ক। যা রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ৭ল জানুয়ারি লালগড়ের নেতাই গ্রামে সিপিএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে নির্বিচারে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। তাতে নয়জনের মৃত্যু হয়। জখম হন ২৪ জন। তারপর থেকে এই দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে তৃণমূল। শুভেন্দু তৃণমূলে থাকাকালীন প্রতি বছর নেতাই গ্রামে আসতেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর গত বছর শুভেন্দুকে নেতাইয়ে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ। তবে এদিন শহিদ বেদিতে এসে মাল্যদান করেন শুভেন্দু অধিকারী।