নয়াদিল্লি, ৩০ ডিসেম্বর (হি.স.): উজবেকিস্তানে সংস্থার তৈরি কফ সিরাপ খেয়ে ১৮ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল। দ্রুত সেই বিতর্কিত ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা মারিয়ন বায়োটেকের সমস্ত কফ সিরাপ উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অরগাইজেশন (সিডিএসসিও)-র পরিদর্শনের পরে পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হল ম্যারিয়ন বায়োটেকের নয়ডা ইউনিটের উৎপাদন। শুক্রবার এ খবর জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য।
এই কারখানায় তৈরি কাশির ওষুধ ‘ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ’ খেয়ে উজবেকিস্তানে শিশুমৃত্যুর অভিযোগ। উজবেকিস্তান থেকে অভিযোগ আসার পরেই পদক্ষেপ করে প্রশাসন। ওই কারখানা থেকে ওষুধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ‘ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ’ তৈরি বন্ধ রাখার কথা আগেই জানিয়েছিল নয়ডার ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ। এবার গোটা কারখানাই বন্ধ করা হল।
নয়ডার কারখানায় তৈরি কফ সিরাপে বিষাক্ত ইথিলিন গ্লাইকোল থাকার কারণেই শিশুমৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী টুইটে জানিয়েছেন, “সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অরগাইজেশন (সিডিএসসিও)-র পরিদর্শনের পর ম্যারিয়ন বায়োটেকের নয়ডা ইউনিটের উৎপাদন বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষটি নিয়ে আরও তদন্ত চলছে।” মঙ্গলবার থেকেই বিষয়টি নিয়ে উজবেকিস্তানের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা হচ্ছে বলে আগেই জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। কাশির ওষুধে সত্যিই কোনও সমস্যা রয়েছে কিনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত করছে সিডিএসসিও, উত্তরপ্রদেশের মেরঠ ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার ফর ড্রাগ এবং নয়ডার ড্রাগ ইন্সপেক্টর।
কফ সিরাপে এথিলিন গ্লাইকলের মতে কোনও বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। নয়ডার কারখানা থেকে সংগ্রহ করা নমুনা চণ্ডীগড়ের রিজিওনাল ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবোরেটরিতে পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সেই রিপোর্টের উপর ভিত্তি করেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যে সংস্থার তৈরি ওষুধের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই ম্যারিয়ন বায়োটেকের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ওই নামে কাশির ওষুধ তৈরি বন্ধ রাখবেন তারা।
২০১২ সালে উজবেকিস্তানে ওষুধ রফতানির ছাড়পত্র পায় ম্যারিয়ন বায়োটেক। গত কয়েকদিনে তাঁদের তৈরি কফ সিরাপ খেয়ে অসুস্থ হয়ে ১৮ শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ। জানা গিয়েছে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই শিশুদের ওই ওষুধ খাইয়েছিলেন অভিভাবকরা। দুই থেকে সাতদিন ওষুধ খাবার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুরা। তবে, ‘ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ’ নামে এই কাশির ওষুধ ভারতে পাওয়া যায় না।
2022-12-30