তাইপেই, ২৭ ডিসেম্বর (হি.স.) : তাইওয়ানে সামরিক বাহিনীতে কাজ করার মেয়াদ চার মাস থেকে বেড়ে এক বছর হচ্ছে। চিনের হুমকির প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দেশটির প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন এমনটিই বলেছেন।এদিন এক সংবাদ সম্মেলন তিনি বলেন, শান্তি আকাশ থেকে নামবে না… তাইওয়ান কর্তৃত্ববাদী সম্প্রসারণের সম্মুখ পর্যায়ে রয়েছে। তবে এই নিয়ম চালু হবে ২০২৪ সাল থেকে।
তাইওয়ানিজ় প্রেসিডেন্ট সাই ইং ওয়েন জানিয়েছেন, ২০০৫ সালের ১ জানুয়ারির পর জন্মানো সকল তাইওয়াননিজ় যুবকেই সামরিক পরিষেবা দিতে হবে। তিনি বলেন, “তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চিনের হুমকি ক্রমে অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠছে। কেউ যুদ্ধ চায় না। কিন্তু দেশবাসীর শান্তি আকাশ থেকে পড়ে না।” একদিন আগেই তাইওয়ানের দিকে ৭১টি যুদ্ধবিমান এবং ৭টি রণতরী পাঠিয়েছে চিন বলে, দাবি করেছিল তাইওয়ানিজ় সরকার। পরের দিনই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
আগেই তাইওয়ানিজ় যুবদের চারমাসের জন্য সেনায় যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। তবে যে দ্রুততায় চিনের হুমকি বাড়ছে, তাতে এই সময়টা যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন সাই ইং ওয়েন। তিনি বলেছেন, “যেভাব অতি দ্রুত প্রতি মুহূর্তে পরিস্থিতি বদলে যাচ্ছে, তাতে চার মাসের সামরিক পরিষেবা যথেষ্ট নয়। আমরা ২০২৪ সাল থেকে ১ বছরের জন্য সামরিক পরিষেবা বাধ্যতামূলক করতে চলেছি।” বস্তুত, সামরিক শাসনে থাকাকালীন তাইওয়ানে ১ বছরের সামরিক পরিষেবা বাধ্যতামূলক ছিল। সেই সময়ে নাগরিকদের মধ্যে এই বিধি নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ ছিল। তবে, সাম্প্রতিক সমীক্ষাগুলিতে দেখা গিয়েছে, দেশের অন্তত দুই তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন, ১ বছরের সামরিক পরিষেবার বিধি ফিরিয়ে আনা উচিত।
১৯৪৯ সালে চিনা গৃহযুদ্ধের শেষে, চিন থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছিল তাইওয়ান। তারপর থেকে বারবারই তাইওয়ানকে চিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে এসেছে বেজিং। কিন্তু, তাইওয়ানিজ় জনগণ চিনের অংশ হতে চায় না। তারা স্বাধীন দ্বীপরাষ্ট্রের পরিচয়েই থাকতে চায়। চিন অবশ্য এখনও পর্যন্ত তাইওয়ান দখলের জন্য সামরিক শক্তির প্রয়োগ করেনি। তবে, শি জিনপিং-এর শাসনকালে তাইওয়ানে, চিনা হামলার সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি বলেই দাবি পশ্চিমী দেশগুলির। চিনা হুমকির প্রেক্ষিতে তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির চেষ্টা চালাচ্ছে তাইওয়ান। যুদ্ধ বিমান এবং অ্যান্টিশিপ মিসাইলের সংখ্যা বাড়াচ্ছে। তবে, চিনের বিপুল সামরিক শক্তির সামনে, তা অতি সামান্যই বলে জানিয়েছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।