আগরতলা, ১৫ ডিসেম্বর (হি. স.) : সংসদ অধিবেশনে ত্রিপুরার সমস্যা উত্থাপনের পাশাপাশি বিহারে বিষ মদে মৃত্যু মিছিলের ঘটনায় সমালোচনায় সরব হয়েছেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। রাজ্যসভায় আজ তিনি শূন্যকালে বিহারে বিষ মদে মৃত্যু মিছিলের ঘটনায় আলোচনার দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, কোভিড পরিস্থিতির কারনে বন্ধ হয়ে যাওয়া কমলাসাগর এবং দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শ্রীনগরের সীমান্ত হাট দুটি পুনরায় চালু করার দাবি জানালেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। তার পাশাপাশি প্রস্তাবিত সীমান্ত হাট গুলির কাজ দ্রুত বাস্তবায়নেরও দাবি জানান তিনি। সবচেয়ে তাত্পর্যপূর্ণ ঘটনা হল, বিগত দিনে ত্রিপুরার সাংসদরা রাজ্যের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সংসদে দাবি রাখা ছিল প্রায় বহু প্রতিক্ষিত বিষয়। অথচ আজ প্রতিদিন রাজ্যের প্রাপ্তি ও দেশের বিভিন্ন সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে সরব সরব হচ্ছেন বিপ্লব কুমার দেব।
এদিন শ্রী দেব বলেন, এই সীমান্ত হাট গুলি পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু এবং বহু মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস ছিল। এখানে দুই দেশের স্থানীয় দোকানীরা এসে তাঁদের স্থানীয় পণ্য বিক্রি করতেন। দুই দেশের মানুষ নির্ধারিত নিয়মাণুসারে পণ্য ক্রয় হতো। তবে, কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর মেঘালয়ের অধীন সীমান্ত হাট খোলা হলেও ত্রিপুরার এই দুটি সীমান্ত হাট খোলা হয়নি। তাঁর দাবি, এবিষয়ে ত্রিপুরা সরকারের শিল্প দপ্তরের তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে পত্রযোগে বাংলাদেশ সরকারের সাথে আলোচনাক্রমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানানো হয়েছে।
তাঁর বক্তব্য, বর্ডার হাটের কার্যক্রম দেখার জন্য জয়েন্ট বর্ডার হাট কমিটি রয়েছে। যেখানে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট জেলার আধিকারিকরা এর সাথে যুক্ত থাকেন। ত্রিপুরার সীমান্ত হাট খুলতে আগ্রহী হলেও, বাংলাদেশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এমনকি সে দেশের তরফে সীমান্ত হাট না খোলার বিষয়ে কোন কারণও জানানো হয়নি। তাতে স্থানীয় বহু মানুষের জীবন-জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত আলোচনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। একই সঙ্গে কমলপুর ও ধর্মনগরে সীমান্ত হাটের কাজ দ্রুত শুরু করার জন্যও দাবি জানান বিপ্লব কুমার দেব।
এদিকে, বিষাক্ত মদ্যপানে বিহারে মৃত্যুর মিছিল প্রসঙ্গে সংসদে সুর চড়িয়েছেন সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। এদিন রাজ্যসভার দৃষ্টি আকর্ষণ করে নীতিশ কুমার সরকারের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। তাঁর কথায়, বিষাক্ত মদ পান করে বহু গরিব মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখার জন্য আবেদন জানান তিনি। এদিন সংসদে উপস্থিত অধিকাংশ সদস্যরাও শ্রী দেবের সাথে এই ঘটনার প্রতিবাদে সুর চড়িয়েছেন।
সামাজিক মাধ্যমে বিপ্লব কুমার দেব লিখেন, মদ নিষিদ্ধ দাবি করা বিহার সরকারের পরোক্ষ প্রশ্রয়ে রাজ্যজুড়ে অবৈধ বিষাক্ত মদের কারখানা গড়ে উঠেছে। বিষমদে মৃত্যুমিছিল নীতীশ কুমার সরকারের চরম ব্যর্থতার নজির।
উল্লেখ্য, বিহারের সারণে বিষমদে প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিজেপি এই ইস্যুতে সংসদের ভিতরে ও বাইরে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছে। অন্যদিকে নীতীশ কুমার দাবি বলেছেন, বিষমদ খেলে তো মরবেই, মানুষকে সতর্ক হতে হবে। তাঁর এই বক্তব্যে দেশজুড়ে আরো সমালোচনার ঝড় উঠেছে। মদ নিষিদ্ধ রাজ্য নীতীশ কুমারের বিহারে বিপুল সংখ্যায় মৃত্যুর পাশাপাশি অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ইতিপূর্বেও বিষমদ পানে মৃত্যু হয়েছে বিহারে।