ত্রিপুরায় বিএসএফ-বিজিবি বৈঠক : সীমান্তে হত্যা শূন্যে আনতে দৃঢ় অঙ্গীকার, অপরাধ দমনেও সমন্বয়ের আশ্বাস

আগরতলা, ৯ ডিসেম্বর (হি. স.) : বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স(বিএসএফ) এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি)-র মধ্যে তিন দিনব্যাপী সীমান্ত সমন্বয় বৈঠক শুক্রবার আগরতলায় শেষ হয়েছে। ওই বৈঠকে উভয় বাহিনী পারস্পরিক স্বার্থে সীমান্ত সুরক্ষায় একে অপরকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএসএফ ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ার হেডকোয়ার্টারে আয়োজিত যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে আইজি বিএসএফ ত্রিপুরা ফ্রন্টিয়ার সুমিত শরণ বলেন, বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয় যা উভয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মধ্যে বোঝাপড়া এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে সে বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে।

বিশেষ করে উগ্রপন্থী কার্যকলাপ, মাদক দ্রব্যের মত নিষিদ্ধ জিনিসপত্রের চোরাচালান, অনুপ্রবেশ সহ বিভিন্ন আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিষয়ে অত্যাধিক জোর দেওয়া হয়েছিল। সাথে তিনি যোগ করেন, মুলতুবি থাকা উন্নয়নমূলক কাজ এবং সমন্বিত বর্ডার ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএসএফ ও বিজিবির সৈন্যদের পাশাপাশি উভয় পক্ষের স্থানীয় জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরির বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

সারন বাহিনীর মধ্যে সুসম্পর্কের কথাও বলেছেন এবং দাবি করেছেন যে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে।

তাঁর কথায়, ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী নিয়মিত ছয় মাসের ব্যবধানে ইন্সপেক্টর জেনারেল, বিএসএফ-রিজিয়ন কমান্ডার, বিজিবি স্তরের সীমান্ত সমন্বয় সম্মেলন সহ বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন সমন্বয় সভায় অংশগ্রহণ করে তাদের ক্রমবর্ধমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বিএসএফ এবং বিজিবি কেবল তাদের বন্ধুত্বের বন্ধনকে দৃঢ় করেনি বরং বিভিন্ন কমান্ড স্তরে অর্থপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সীমান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য পারস্পরিক আস্থা ও সহযোগিতার উচ্চ স্তরে সূচনা করেছে, দাবি করেন আইজি বিএসএফ।

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চল বর্ডার গার্ডসের আঞ্চলিক কমান্ডার তানভীর গণি চৌধুরী ১৩ সদস্যের বিজিবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, উভয় বাহিনী সীমান্ত হত্যা শূন্য করার জন্য নিবিড় সমন্বয়ে কাজ করবে।

তাঁর বক্তব্য, আগরতলা এবং ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর অবদানের কথা স্মরণ করে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বীরত্বের সাথে লড়াই করেছিল। চৌধুরী বলেন, বিজিবি এবং বিএসএফকে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে আমরা সীমান্তে সুরক্ষা জোরদার করার লক্ষ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে আমাদের মতবিনিময় করেছি।

তাঁর কথায়, কিছু বিষয়ে গভীরভাবে আলোচনা করা হয়েছে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে অস্ত্র চোরাচালান ও পাচারের মতো অপরাধ দমনে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। উভয় বাহিনী সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। আমরা উগ্রপন্থী কার্যকলাপ এবং অবৈধ মাদক পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।তাঁর মতে, উভয় বাহিনী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মূল্যবান তথ্য আদান-প্রদান, উন্নয়ন প্রকল্প ত্বরান্বিত করতে এবং স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করার অঙ্গীকার করেছে।