ক্রীড়া প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ ডিসেম্বর।। দুরন্ত জয়। তবুও গ্রুপে তৃতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো ত্রিপুরাকে। দুরন্তভাবে চন্ডিগড় বধ হলেও রানের গড়ের নিরিখে মূলপর্ব অধরা ত্রিপুরার। ই-গ্রুপ থেকে ছয় ম্যাচে কুড়ি পয়েন্ট পেয়ে গুজরাট এবং ত্রিপুরার সমসংখ্যক ১৬ পয়েন্ট পেয়ে রানের গড়ে বেশি থাকার সুবাদে পাঞ্জাব খেলবে মূলপর্বে। ত্রিপুরা প্রথম দুই ম্যাচে পরাজিত হওয়ার পর শেষের ৪ ম্যাচে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন ত্রিপুরার ক্রিকেটাররা। বৃহস্পতিবার গ্রুপের শেষ ম্যাচে চন্ডিগড়কে হেলায় ১৭৩ রানের বড় ব্যবধানে পরাজিত করলো ত্রিপুরা। কে সি এ ক্রিকেট মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ত্রিপুরার গড়া ৩১৩ রানের জবাবে চন্ডিগড় মাত্র ১৪০ রান করতে সক্ষম হয়। ত্রিপুরার দলনায়ক শ্রীদাম পালের চোখ ঝলসানো শতরান করার পর বল হাতে অর্জুন দেবনাথ ৫ উইকেট নিয়ে ত্রিপুরার জয় সহজ করে দেন। আসরে ৬ ম্যাচ খেলে ত্রিপুরার পয়েন্ট ১৬। গ্রুপে তৃতীয় স্থান পেলো ত্রিপুরা। এদিন সকালে চন্ডীগড়ের অধিনায়ক টসে জয়লাভ করে ত্রিপুরাকে প্রথমে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান। ত্রিপুরার শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি। অফ ফর্মে থাকা বিক্রম কুমার দাস এদিনও ব্যর্থ হয়েছেন। করেছেন ১২ রান ৩০ বল খেলে ১ টি বাউন্ডারির সাহায্যে। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামা ঋতুরাজে দেবনাথও (৪) ব্যর্থ হয়েছেন। এ অবস্থায় ওপেনার সেন্টু সরকারের সঙ্গে রুখে দাড়ান দলনায়ক শ্রীদাম পাল। শুরু হয় পাল্টা আঘাত। ওই জুটি ৮২ বল খেলে ৮৩ রান যোগ করে ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যান। সেন্টু ৮৪ বল খেলে ৩ টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৫২ রান করেন। সেন্টু আউট হতেই দলনায়কের সঙগে রুখে দাঁড়ান সহ অধিনায়ক শঙ্কর পাল। শুরু থেকেই দুজন স্কোরবোর্ড সচল রাখার দিকে নজর দেন। শঙ্কর থেকে শ্রীদাম ছিলেন বিধ্বংসী মেজাজে। খেলা যত শেষের দিকে এগুচ্ছিল ততই ত্রিপুরার দুই ব্যাটসম্যান আরও রুদ্রমূর্তি ধারন করতে থাকেন। শেষ ৪ ওভারে ত্রিপুরা যোগ করেন ৫৬ রান। শ্রীদাম ৯২ বল খেলে ৪ টি বাউন্ডারি ও ৫ টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে শতরান করার পর শঙ্কর ৫৭ বল খেলে ৩ টি বাউন্ডারি ও ১ টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে অর্ধশতরান করেন। ওই জুটি চতুর্থ উইকেটে ১৩৮ বল খেলে ১৮৯ রান যোগ করে ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যান। দলীয় ৩০০ রানের মাথায় শ্রীদামের সংগ্রামী ইনিংসের সমাপ্তি ঘটে। আউট হওয়ার আগে শ্রীদাম ১০৯ বল খেলে ৭ টি বাউন্ডারি ও ৯ টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ১৪৪ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ত্রিপুরা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩১৩ রান করে। শঙ্কর ৬৭ বল খেলে ৫ টি বাউন্ডারি ও ৩ টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৭৬ রানে এবং কিষান মুড়াসিং ২ রানে অপরাজিত থেকে যান। চন্ডীগড়ের পক্ষে মহ: আশাদ (২/৪৬) এবং যুবরাজ চৌধুরি (২/৭৫) সফল বোলার। জবাবে খেলতে নেমে ত্রিপুরার বোলারদের সাড়াশি আক্রমণে ‘তাসের ঘরের’ মতো ভেঙ্গে যায় চন্ডীগড়ের যাবতীয় প্রতিরোধ। ব্যাট হাতে শ্রীদাম-রা দাপট দেখানোর পর বল হাতে বিপক্ষের উপর স্ট্রিম রোলার চাপান অর্জুন দেবনাথ। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন বিক্রম দেবনাথ এবং ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ। ওই ত্রয়ীর আক্রমণে ২২ গজে লুটিয়ে পড়ে চন্ডিগড়ের যাবতীয় প্রতিরোধ। একসময় ৪৮ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ছিলো খাদের কিনারায়। শেষ পর্যন্ত ১৪০ রান করতে সক্ষম হয়। চন্ডিগড়ের পক্ষে যুবরাজ চৌধুরি ৪৩ বল খেলে ১ টি বাউন্ডারি ও ৩ টি ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৬, মহ: আশাদ ৪৩ বল খেলে ৩ টি বাউন্ডারির সাহায্যে ২২ (অপ:) রান করেন। ত্রিপুরার পক্ষে অর্জুন দেবনাথ (৫/৪৩), ইন্দ্রজিৎ দেবনাথ (২/২৫) এবং বিক্রম দেবনাথ (২/২৬) সফল বোলার।
2022-12-01

