আগরতলা, ১৬ নভেম্বর (হি. স.) : ত্রিপুরায় প্রতিষ্ঠান বিরোধী হওয়া সরকার কিংবা শাসক দলের বিরুদ্ধে নেই। একাংশ কার্যকর্তাদের বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ-আক্ষেপ রয়েছে। তাতে, নির্বাচনের ফলাফলে প্রভাব পরবে না বলে জোর গলায় দাবি করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব। তিনি নিশ্চিত, বিজেপি কিংবা নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ নেই। তাই, শাসক দলের কার্যকর্তাদের মাথা নিচু করে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
সাথে তিনি যোগ করেন, দলীয় কার্যকর্তাদের অসন্তোষ ভোটের বাক্সে প্রভাব ফেলবে। কিন্তু, নতুন ভোটার সেই ঘাটতি পূরণে মুখ্য ভূমিকা নেবেন। তাই, প্রত্যেক নতুন ভোটারের কাছে যাওয়ার জন্য কার্যকর্তাদের বার্তা দিয়েছেন তিনি। আজ জাতীয় প্রেস দিবস উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হয়ে এভাবেই মনের ভাব প্রকাশ করেছেন বিপ্লব কুমার দেব।
এদিন বিপ্লব বলেন, দলীয় কার্যকর্তারা অসন্তুষ্ট হলেই ভোটের বাক্সে প্রভাব পরে। ভোট কাটাকাটিতে তাঁরাই মুখ্য ভূমিকা নিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে নতুন ভোটাররা সেই শূন্যস্থান পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। তাঁর কথায়, ২০১৮ সালের পর ২.৫ লক্ষ নতুন ভোটার ত্রিপুরার ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়েছেন। তাঁরা আগামী ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে প্রথমবার ভোট দেবেন। তাঁদের প্রত্যেকের কাছে বিজেপি কার্যকর্তাদের পৌছাতে হবে।
তাঁর মতে, নির্বাচনী লড়াই কঠিন ভাবলেই জয় পাওয়া সহজ হয়। এক্ষেত্রে ২০১৮ সালে সিপিএম নির্বাচনী লড়াইকে খুবই সহজ বলে মনে করেছিল। তাই, তাঁদের পরাজয়ের মুখ দেখতে হয়েছিল। তাঁর দাবি, বর্তমানে ত্রিপুরায় বিজেপি ছাড়া অন্য দলের তেমন অস্তিত্ব নেই। তাঁদের কাছে প্রচারের জন্য নেতা নেই। ফলে, মানুষ বিজেপির প্রতি আস্থা রাখবে, দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন তিনি। তাঁর দাবি, ব্যক্তিকে পছন্দ না হতেই পারে। কিন্তু, মানুষ ভোট বিজেপি-কেই দেবেন।
এদিন বিপ্লব বলেন, লোকসভা নির্বাচনে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মনের জন্য কিছুটা প্রভাব পড়েছে, যার ফায়দা কংগ্রেস পেয়েও ঘরে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু, এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গেছে। তাঁর দাবি, ২০১৮ সালে পরিবর্তনের জন্য মানুষ ভোট দিয়েছিলেন। ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচনে সুন্দর ভবিষ্যতের মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এদিন কটাক্ষ করে বলেন, গ্রেটার তিপরাল্যান্ডের ব্যাখ্যা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মণ দিতে পারবেন। আমরা একাত্মবাদে বিশ্বাস রাখি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দিক নির্দেশনায় এগিয়ে চলছি।
এদিন তিনি দাবি করেন, ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে ৫ লক্ষাধিক রোজগার হয়েছে। মানুষের গড় আয় বেড়েছে। ত্রিপুরার বাজেট ১৪৭০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২৭০০০ কোটি টাকা হয়েছে। শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের আয় বেড়েছে, তাঁদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে।তাঁর সাফ কথা, ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি আবারো ভিশন ডকুমেন্ট নিয়ে হাজির হবে। সরকার এবং দলের লক্ষ্য মানুষের কাছে তুলে ধরবে। কারণ, ২০১৮ সালের ভিশন ডকুমেন্টের ১২টি প্রধান প্রতিশ্রুতি ইতিমধ্যে পূরণ হয়ে গেছে। তাই, আবারো নতুন লক্ষ্য স্থির করে মানুষের দরবারে যাবে বিজেপিদ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেন তিনি।