করিমগঞ্জে রেলপুলিশের হাতে গ্রেফতার রোহিঙ্গা যুবক

করিমগঞ্জ (অসম), ১২ নভেম্বর (হি.স) : করিমগঞ্জ রেল জংশনে ধরা পড়েছে এক রোহিঙ্গা যুবক। ধৃত রোহিঙ্গাকে মহম্মদ হাসিম বলে শনাক্ত করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে করিমগঞ্জ রেল জংশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে আগরতলা-শিলচর প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ওই ট্রেনে এসে সে প্ল্যাটফর্মে নেমে ঘোরাফেরা করতে থাকে। তার চালচলন দেখে সন্দেহ জাগে প্ল্যাটফর্মে উপস্থিতদের। তাঁরা সন্দেভাজন যুবকের পরিচয় জানতে চাইলে তাঁদের একজনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন চেয়ে কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে। তখন তার রোহিঙ্গা ভাষায় কথা বলা শুনে সন্দেহ জাগে জিজ্ঞাসাবাদকারীদের।

স্থানীয় সৌমিত্র সরকার, রাজদীপ দেব, অভিজিৎ দাসরা জানান, ধৃতকে তার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে ‘দিল্লিতে’ বলে উত্তর দেয়। এতে তাঁদের সন্দেহ গাড় হয়। কারণ দিল্লির বাসিন্দা হলে সাধারণত স্পষ্ট হিন্দি ভাষায় কথা বলার কথা। তাঁরা তার কাছে কোনও ঠিকানার প্রমাণপত্র রয়েছে কিনা জানতে চান। সে কোনও কিছু দেখাতে পারেনি। সিমকার্ড নেই, এ ধরনের একটি মোবাইল হ্যান্ডসেট থেকে রিফিউজি কার্ড দেখে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি অবগত করেন রেল পুলিশকে।

কথাবার্তায় ভাষায় অসঙ্গতি ধরা পড়লে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে রেল পুলিশ। পরে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশকারী রোহিঙ্গা যুবক নিশ্চিত হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে আব্দুল হামিদের ছেলে মহম্মদ হাসিম (১৭) বলে জানায়। পুলিশকে প্রদত্ত বয়ানে সে বলেছে, বাংলাদেশের কক্সবাজারের এক রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে থাকত। কোনও ধরনের বৈধ কাগজ এবং নথি ছাড়া দালালের হাত ধরে বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে বলে বয়ানে জানিয়েছে সে। তার মোবাইল হ্যান্ডসেট থেকে রাষ্ট্রপুঞ্জের হাই কমিশনার রিফিউজি কার্ডের ছবি পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।
রেল পুলিশ ইতিমধ্যে ধৃতের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ধৃত যুবক কার সূত্র ধরে অসমের সীমান্ত জেলা করিমগঞ্জে এসেছে, করিমগঞ্জ স্টেশন থেকে অন্যের মোবাইল ফোন ব্যবহার করে কার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিল, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা।

প্রসঙ্গত, গত এক বছরে বেআইনিভাবে ভারতে প্রবেশের অপরাধে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে অসম পুলিশ ও বিএসএফ। শুক্রবার রাতে ফের নতুন আরও এক রোহিঙ্গা নাগরিক গ্রেফতারের ঘটনায় ওয়াকিবহাল মহল উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *