সড়ক দুর্ঘটনায় লাগাম টানতে করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পর্যালোচনা সভা

করিমগঞ্জ (অসম), ২৮ অক্টোবর (হি.স.) : সমগ্র রাজ্যের সঙ্গে করিমগঞ্জ জেলায়ও সাম্প্রতিককালে বর্ধিত সড়ক দুর্ঘটনায় লাগাম টানতে জেলাশাসকের পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে পর্যালোচনা সভা।

অধিকাংশ সড়ক দুর্ঘটনায় নানা ধরনের যানের যাত্রী-আরোহীর মৃত্যু কিংবা পঙ্গুত্ব জীবন কাটাতে হয়। তেবে সড়ক দুর্ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১৫ থেকে ৪৪ বছরের সৃজনশীল বয়োসীমার তরুণ তথা ব্যক্তির জীবনহানি ও পঙ্গুত্বের শিকার হতে হচ্ছে। তাই জনগণের জীবন সুরক্ষার জন্য সড়ক দুর্ঘটনায় লাগাম টানতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আজ শুক্রবার করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলাশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে জেলাশাসক মৃদুল যাদবের পৌরোহিত্যে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় পুলিশ প্রশাসন, জেলা পরিবহণ দফতর, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, পূর্ত (সড়ক), স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শাখার আধিকারিকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সভায় জেলাশাসক সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রা রোধে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জাতীয় সড়কে সতর্কতাবার্তা সংবলিত সাইনেজ, বড় আকারের হোর্ডিং সহ দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সতর্কীকরণ বার্তার বোর্ড সংস্থাপনের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি জেলাশাসক বিভিন্ন স্থানে রিফ্লেক্টর সিগন্যালের মাধ্যমে সতর্কতা এবং নির্ধারিত গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করতেও বলেন।

যানবাহন চালকদের লাইসেন্স সহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়মিত পরীক্ষা করতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শাখা ও জেলা পরিবহণ বিভাগের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন জেলাশাসক। এছাড়া যানবাহনের চালকরা সঠিক সিগন্যাল মানছে কি না তার নিয়মিত তদারকি করতেও বলেন। পাশাপাশি যানবাহনের সঠিক সিগন্যাল মেনে চালানো সম্পর্কে চালকদের সচেতন করতে পরামর্শ দেন তিনি।

সভায় জানানো হয়েছে, ইন্টিগ্রেটেড রোড অ্যাক্সিডেন্ট ডাটাবেজ বা আইআরএডি-এর মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পুলিশ, জেলা পরিবহণ বিভাগ, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগে সড়ক দুর্ঘটনার তদারকি করা হবে এবং বিভাগগুলোর মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে কারণ অনুসন্ধানক্রমে ডাটাবেজ প্রস্তুত করা হবে।

এদিকে সভায় ভারপ্রাপ্ত জেলা পরিবহণ আধিকারিক সাহাব উদ্দিন তাপাদার জানান, পুলিশ এবং জেলা পরিবহণ বিভাগের সহযোগে জেলায় সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং নিয়মিত তদারকি জারি রয়েছে। এর অতিরিক্ত হিসেবে শীঘ্রই বিভাগ দুটির সহযোগিতায় সড়ক সুরক্ষার নিয়ম অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যাপক বিশেষ অভিযান সমগ্র জেলা জুড়ে শীঘ্রই চালানো হবে।

তিনি আরও জানান, করিমগঞ্জের শহরতলি বাবা হোটেলের সম্মুখস্থল খুবই স্পর্শকাতর, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা। তাই ওই স্থানে সতর্কতার সাথে এবং গতি নিয়ন্ত্রণ করে যানবাহন চালানো সহ চলাফেরা করার আহ্বান জানান জেলা পরিবহণ আধিকারিক। এছাড়া জেলার অন্যান্য দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলোতেও শীঘ্রই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও মত পোষণ করেন তিনি।

আজকের পর্যালোচনা সভায় করিমগঞ্জ জেলা সড়ক সুরক্ষা কমিটির পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে এবং জনগণের জীবন রক্ষা করতে জনগণকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে, হেলমেট পরিধান, সিটবেল্ট পরিধান, যানবাহন চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা থেকে বিরত থাকা, যত্রতত্র ওভারটেক থেকে বিরত থাকা, নিয়ন্ত্রিত গতিতে যানবাহন চালানো, জাতীয় সড়কে উপযুক্ত সিগন্যাল মেনে গাড়ি চালাতে বিশেষভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে।

সভায় ডিডিসি বিক্রম দেবশর্মা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) পার্থপ্রতিম দাস, করিমগঞ্জ পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক বিক্রম চাষা, জাতীয় সড়কের নির্বাহী বাস্তকার আব্দুল হক খান, পূর্ত গ্রামীণ সড়কের নির্বাহী বাস্তুকার নিরঞ্জন রায়, স্কুলসমূহের পরিদর্শক একে দাস, স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে ডা. জামাল আহমেদ চৌধুরী, এমভিআই দুর্গা গগৈ, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শাখার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শাখার অন্যান্য আধিকারিক ও কর্মচারী সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় আধিকারিক ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *