অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করতে ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে : উপমুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ২৬ অক্টোবর (হি. স.) : অর্থনৈতিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে ত্রিপুরার গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সরকার চায় প্রতি ঘরে সুশাসন। ত্রিপুরার প্রান্তিক জনপদের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দিতে রাজ্যের সর্বত্র বিকাশ মেলা এবং সুশাসন শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ খোয়াই জেলার ধলাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতে জেলা পঞ্চায়েত রিসোর্স সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে ত্রিপুরার উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা একথা বলেন।

প্রসঙ্গত, এই জেলা পঞ্চায়েত রিসোর্স সেন্টারটি নির্মাণে ব্যয় হবে ২ কোটি টাকা। এদিন ধলাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতে সুশাসন শিবিরও অনুষ্ঠিত হয়। সুশাসন শিবিরে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ২৪টি প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়েছিল। উপমুখ্যমন্ত্রী সুশাসন শিবিরে প্রদর্শনী স্টলগুলি পরিদর্শন করেন।
এদিন উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ এলাকা উন্নত হলেই শহর উন্নত হবে। তাই গ্রামীণ এলাকার মানুষের জীবন জীবিকার মান উন্নয়নে সরকার বহুমুখী কর্মসূচি নিয়েছে। এ সমস্ত উন্নয়ন কর্মসূচিতে মা-বোনদের যুক্ত করা হচ্ছে। তাঁর মতে, মহিলারা স্বনির্ভর হলেই একটি রাজ্যের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। তাই মহিলা স্বশক্তিকরণ সরকারের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র।

তাঁর দাবি, ত্রিপুরার ১২টি পিছিয়ে পড়া ব্লকের উন্নয়নে সরকার গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের সখি পাড়ায় বিদ্যুৎ পরিষেবা ছিলনা। বর্তমান সরকার সৌরশক্তির সাহায্যে এই গ্রামকে আলোকিত করেছে।

এদিন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় ১ জন সুবিধাভোগীকে মাছ পরিবহণের ভ্যান, ২ জন অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিককে ই-শ্রম কার্ড, ২ জন কৃষককে সয়েল হেলথ কার্ড ও খোয়াই ব্লকের ৮টি স্বসহায়ক দলকে ১৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা সুবিধাভোগীদের হাতে চেক, মাছ পরিবহণের ভ্যান ও অন্যান্য সুবিধাগুলি তুলে দেন।
এদিকে, ধলাবিল গ্রাম পঞ্চায়েতে অনুষ্ঠিত সুশাসন শিবিরে ৪০টি পরিবারকে মোরগ পালনে সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সুবিধাভোগী পরিবারগুলিকে ১০টি করে মোরগ ও মোরগ পালনে সহায়ক সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। স্বাবলম্বন প্রকল্পে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে ২ জন সুবিধাভোগীকে অটোরিক্সা ও ১ জন উদ্যোগীকে ধূপকাঠির শলা তৈরি প্রকল্পে ২২ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়। বন দপ্তর থেকে জেএফএমসি’র অধীনে ১৩টি স্বসহায়ক দলকে ১২ লক্ষ ৮৪ হাজার ২৪০ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।

তাছাড়া বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মৎস্য চাষের জন্য ১ জন সুবিধাভোগীকে ১০ লক্ষ টাকা ও ১টি স্বসহায়ক দলকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর থেকে ২০জন কৃষককে পাওয়ারটিলার ও ৯৬ জন কৃষককে কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ১,১৮৫ জন কৃষকের মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে সয়েল হেলথ কার্ডের জন্য। সয়েল হেলথ কার্ড দেওয়া হয়েছে ১১ জন কৃষককে। মৎস্য দপ্তর থেকে ৮ জন মৎস্য চাষীকে প্রধানমন্ত্রী মৎস্য সম্পদ যোজনায় মাছের পোনা ও ঔষধ দেওয়া হয়।শিবিরে প্রধানমন্ত্রী অনুসূচিত জাতি অভ্যুদয় যোজনায় ১২ জন সুবিধাভোগীকে মৎস্যচাষের জলাশয় সংস্কারের জন্য ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সুশাসন শিবিরে মহকুমা প্রশাসন থেকে এসসি, এসটি, পিআরটিসি, ওবিসি সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *